ধর্মসচিব নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরাও চাই যেন ন্যায্য হিস্যা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীরা হজ করতে যেতে পারেন। আশাও দেখা দিয়েছে। আশা করি, বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীরা যেতে পারবেন। কয়েক দিন পর তারা যখনই এ বিষয়ে ডিটেইল জানাবে, তখন আমরা ব্যবস্থা নেব।’
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে এখনও হজযাত্রা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। বাংলাদেশিরা যেতে পারবেন কি না কিংবা পারলেও কতজন যেতে পারবেন, এখনও মেলেনি সেসবের উত্তর।
এ বছর সারা বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে ৬০ হাজার জনকে হজ পালনের সুযোগ দেবে সৌদি আরব। এর মধ্যে ১৫ হাজার সৌদি আরব থেকে। আর বাইরে থেকে সুযোগ পাবেন ৪৫ হাজার মুসলমান। আর তাতে অবশ্য আশা দেখছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ধর্মসচিব নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অফিশিয়ালি এখনও তাদের কোনো ডাটা পাইনি। তারা ডিক্লেয়ার করেছে যে, ৪৫ হাজার হজযাত্রীকে বাইরের দেশ থেকে নিয়ে যাবেন। এইটুকু শুধু জেনেছি। তাদের কিছু টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন দেখেছি।’
সৌদি আরবের বাইরের ৪৫ হাজার হজযাত্রীদের মধ্য থেকে ন্যায্য হিস্যাটা বুঝে নিতে চায় সরকার। তার ওপরই নির্ভর করবে এবার কতজন বাংলাদেশি হজে যেতে পারবেন।
নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরাও চাই যেন ন্যায্য হিস্যা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীরা হজ করতে যেতে পারেন। আশাও দেখা দিয়েছে। আশা করি, বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীরা যেতে পারবেন। কয়েকদিন পর তারা যখনই এ বিষয়ে ডিটেইল জানাবে, তখন আমরা ব্যবস্থা নেব।’
সৌদি সরকার জানিয়েছে, ষাটোর্ধ্ব কাউকে তারা হজ পালনের সুযোগ দেবে না। যাদের বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তারা হজ করতে পারবেন।
গত বছর হজের জন্য নিবন্ধন করেছিলেন প্রায় ৬৫ হাজার বাংলাদেশি। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, তাদের মধ্যে অনেকে নিবন্ধনের অর্থ তুলে নেয়ায় এই মুহূর্তে নিবন্ধিত হজযাত্রীর সংখ্যা ৬১ হাজার ২৩১ জন। এদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব হজ গমনেচ্ছুর সংখ্যা ২১ হাজার। আর ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের সংখ্যা ৪০ হাজার।
সচিব জানান, হজ গমনেচ্ছুদের আগ্রহের কারণে সৌদি সরকারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার সেই দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। আমাদের অফিস রয়েছে ওখানে, আমাদের দূতাবাস হয়েছে ওখানে। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। যখন তাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পারব, বাংলাদেশ থেকে কী পরিমাণ হজযাত্রী তারা নেবেন, তখন আমরা কাজ শুরু করব।’
সৌদি সরকার জানিয়েছে, হজ পালনে তাদের দেশে প্রবেশের ন্যূনতম ১৪ দিন আগে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার দ্বিতীয় ডোজটি সম্পন্ন করতে হবে।
নূরুল ইসলাম বলেন, ‘এখন টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন তারা তাদের দেশের জন্য যেটা ঠিক মনে করবেন, সেটা আমাদের মানতে হবে।’
হজযাত্রীদের টিকার বিষয়ে সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘টিকার ব্যবস্থা তো আমরা করব না। আমরা বলে দিয়েছি আরও আগেই যে, আপনারা টিকা নিয়ে নেন। আর টিকাও তো আমাদের হাতে নেই। যখন বাংলাদেশের টিকা কার্যক্রম শুরু হয়, তখনই বলে দিয়েছি যারা আপনারা নিবন্ধিত হয়েছেন, তারা টিকা নিয়ে নেন।
গত ১৮ মার্চ সরকারি ও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মে মাসের মধ্যে করোনাভাইরাসের টিকার দুটি ডোজ নেয়ার অনুরোধ জানায় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘একমাত্র নিবন্ধিত হজ গমনেচ্ছুদের মার্চ, ২০২১-এর মধ্যে প্রথম ডোজ এবং মে, ২০২১-এর মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণের অনুরোধ করা হলো।’
হজে গমনেচ্ছুদের টিকা কার্ডে ট্র্যাকিং নম্বর, নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে হজ লাইসেন্স নম্বর, এজেন্সির নাম উল্লেখ থাকবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সচিব বলেন, ‘আশা করি হয়তো তারা ইতিমধ্যে নিয়ে ফেলেছে।’
অনেক যাত্রী হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ নিয়েও জটিলতার কথা শোনা গেছে। সচিব বলেন, বিষয়টি নিয়ে পাসপোর্ট অফিসকে অবহিত করেছে মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, ‘যদি কোনো প্রবলেম হয় তারা আমাদেরকে জানাবেন। এসব কাজের জন্য সরকার দরকার হলে ডেডিকেটেড ডেস্ক বসাবে। এগুলোতে কোনো সমস্যা হবে না।’
খুলনা গেজেট/এনএম