খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্যালাইন দেয়ার পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন চার প্রসূতি

গেজেট ডেস্ক

রাজশাহীতে স্যালাইন দেয়ার পর অসুস্থ হয়ে চার নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের আগে রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নওদাপাড়া শাখায় তাদের এই স্যালাইন দেয়া হয়েছিল। স্যালাইন দেয়ার পর আরও অসুস্থ দুই নারী এখনো নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি রয়েছেন।

এদিকে মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে মারা যাওয়া নারীদের মধ্যে দু-একজনের স্বজনদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘ম্যানেজ’ করেছে বলে কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ওই স্যালাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

হাসপাতালের সূত্রে জানা যায়, মার্চ মাসের ৩য় সপ্তাহের কোন এক দিন সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের আগে আইভি স্যালাইন দেয়ার পর ছয়জন নারীর একই রকম শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। অস্ত্রোপচারের পর ধীরে ধীরে তাদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তাদের কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়। হার্টে ব্লক দেখা দেয়। এতে চার নারীর মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে দুইজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সানাউল হক মিয়াকে মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

হাসপাতালের ইনচার্জ ইলিয়াস হোসেন জানান, ‘ঘটনা তদন্তে কমিটি হয়েছে। তারা কাজ করছেন।’ মৃত নারীদের নাম-ঠিকানা জানতে চাইলে ইলিয়াস হোসেন বলেন, তিনি ব্যস্ত আছেন। পরে কথা বলবেন। তবে এরপর তাকে অসংখ্যবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুলতানা নাজনীন রিতার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ‘স্যালাইন দেয়ার পর কয়েকটি রোগীর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। আমরা শুধু আসমা খাতুনের ব্যাপারটা তদন্ত করছি। ওই স্যালাইনটা আর ব্যবহার করা হচ্ছে না। এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মো. ফারুক বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে ঘটনাটি শুনলাম, সেটাও অন্য মাধ্যমে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা সব তথ্য চেয়েছি হাসপাতাল থেকে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। হাসপাতালের গাফিলতি থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আনোয়ারুল কবির জানিয়েছেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগকে ঘটনাটি না জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অন্যায় করেছে। এটা খুবই স্পর্শকাতর ব্যাপার। আমাদের জানানো উচিত ছিল। আমরা জানতে পারলে আমাদের মতো করে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে পারতাম। তারা কেন আমাদের কাছে এটা গোপন করেছে, সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’

মৃত নারীদের পরিবারের মধ্যে একজনের বাড়ি দূর্গাপুর এবং আরেকজনের বাড়ি নওগাঁ বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্য দুই জনের ঠিকানা জানা যায়নি। এদিকে মৃত্যুর বিষয় নিয়েও এ পরিবারগুলো কোন কথা বলতে চাননি। শুধু একটি পরিবার বিচার চেয়ে মামলা করবে বলে জানিয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!