শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আবুল কাশেম মোতাইত (৪৫) নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের শেরু মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
কাশেম মোতাইত উপজেলার চর মাইঝারা এলাকার বাসিন্দা। তিনি কুচাইপট্টি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) তানভীর হোসেন বলেন, জমি নিয়ে পূর্ববিরোধ থেকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের আটক করতে অভিযান চলছে। তিনি আরও বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় কিছুটা উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কাশেম মোতাইতের পরিবারের সঙ্গে একই এলাকার কাশেম আলী খাঁর পরিবারের জমি নিয়ে বিরোধ দীর্ঘ দিনের। এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ হলেও মীমাংসা হয়নি। গতকাল দুপুরে শেরু মার্কেট এলাকায় এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। এক পর্যায়ে কাশেম আলীর নেতৃত্বে একটি দল দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও রড নিয়ে কাশেম মোতাইতের ওপর হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা কাশেম মোতাইতের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। শাবল দিয়ে কোপ দেওয়া হয় শরীরের বিভিন্ন স্থানে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকরা জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে কাশেম মোতাইতের মৃত্যু হতে পারে।
কাশেম মোতাইতের চাচা শফি মোতাইত বলেন, কাশেম মোতাইতের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে কাসেম আলীর বিরোধ মেটাতে কয়েকবার সালিশ হয়েছে। কিন্তু কাশেম আলী সালিশ মানেনি। আজকে সে লোকজন নিয়ে আমার ভাতিজাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা হত্যাকারীদের শাস্তি চাই।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের পরপরই কাশেম আলী ও তার সহযোগীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। কাশেম আলীর মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে কাশেম মোতাইত হত্যায় এলাকায় আতঙ্ক ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সাধারণ বাসিন্দারা এ ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের ধরতে এলাকায় একাধিক অভিযানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মামলার প্রক্রিয়া চলমান।
খুলনা গেজেট/এমএনএস