স্বাস্থ্য খাতের সর্বস্তরে দুর্নীতি বিস্তার করছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার(৯ মে) কারাগারে ডাক্তার নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মাদ শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, দুদক ঠিকমতো কাজ করলে এত দুর্নীতি বাড়তো না। প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করার পরও পাকিস্তান–ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রের পরিবর্তন হচ্ছে না। যে সরকারই আসুক আমলারা সব সময় থাকে। তারা কেন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হয়?
কারাকর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য অধিপ্তরের মহাপরিচালকের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে হাইকোর্ট বলেন, উই আর সন অব দ্যা সয়েল। আমরা সবই জানি, আমাদেরকে ভুল বোঝাবেন না। আমি বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে গিয়েছিলাম। দেখলাম, বাইরের অনেক দেশের ছোট হাসপাতালের অবস্থা এখানকার চেয়ে ভালো। আখেরাতে বিশ্বাস করলে দুর্নীতি করতে পারতেন না। আর কত দুর্নীতি করবেন। দুর্নীতির একটা সীমা থাকা উচিৎ। প্রধানমন্ত্রীর এলাকা ফরিদপুর মেডিকেলে দুর্নীতি হয়েছে।
আদালত আরও বলেন, কারাগারে অনেক নিরীহ মানুষ থাকে। তাই মানুষ শাস্তি পেলে ক্ষমা পাবেন না। ডাক্তাররা সবাই ঢাকায় থাকতে চায়। প্রাইভেট প্রাকটিস করে, কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে যোগসাজশ করে ওষুধ লেখে। এসময় প্যারামেডিকেলের চিকিৎসকদের বিএমডিসি এন্টিবায়োটিক ওষুধ লেখার অনুমতি কেন দিয়েছে সে প্রশ্নও তোলেন হাইকোর্ট।
আদালত থেকে বেরিয়ে রিটকারী আইনজীবী জে আর খান রবিন এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান এসব কথা জানান।
রবিন বলেন, কারা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী কারাগারে ১৪১টি পদের বিপরীতে এরইমধ্যে ১২৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং ডাক্তার নিয়োগে খসড়া নীতিমালা চূড়ান্তের পর্যায়ে রয়েছে। পরে আদালত ১৬টি পদ শূন্য পদে নিয়োগ সম্পন্ন এবং খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করার বিষয়ে আগামী ৬ জুনের মধ্যে জানাতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে কারাবন্দিদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৯ সালে রিট করেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন। পরবর্তীতে কয়েক দফায় শুনানি শেষে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিষয়টি শুনানির জন্য উঠে।
খুলনা গেজেট/কেডি