খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৭ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৬০
  হেজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ নিহত, নিশ্চিত করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি
  ছাত্র আন্দোলনে ১৫৮১ জন নিহত হয়েছেন : স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ কমিটি
সংবাদ সম্মেলনে

স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ও স্যানিটেজার ব্যবস্থা শিক্ষা ফি মওকুফের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনভাইরাসের ঝুঁকি কমাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পূর্বে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ও স্যানিটেজার ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ এবং সরকারি ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ফি মওকুফের দাবি জানিয়েছে নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ খুলনার নারী ও যুব সেল। সোমবার (২৪ আগস্ট) স্থানীয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নারী সেলের আহবায়ক এ্যাড. শামীমা সুলতানা শীলু।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, খুলনা শহরের বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্যানিটেশন ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা। ফলে স্কুলগুলোতে আসা শতকরা ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী টয়লেট ব্যবহারে অনীহা দেখাচ্ছে। তবে বেশি অনীহা দেখায় মেয়ে শিক্ষার্থীরা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষার্থীরা এভাবে টয়লেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকলে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। পাশাপাশি শ্রেণি কক্ষে মনোযোগ কেন্দ্রীভূতকরণেও সমস্যা হয়। এসএনভি নেদারল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের এক স্কুল বেজলাইন জরিপে সম্প্রতি এ ধরনের তথ্য উঠে এসেছে। খুলনা মহানগরীর ১৩টি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার হাজার ২৭৩জন শিক্ষার্থী, ৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ হাজার ১৬৯জন শিক্ষার্থী, ১৪টি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/মাদ্রাসার চার হাজার ৮৭০জন শিক্ষার্থী ও ১০১টি মাধ্যমিক/উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪৯ হাজার ৩৯৩জন শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ পরিচালনা করে এসএনভি।

জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, স্কুলগুলোতে মোট ছাত্রী ছিল ২৩ হাজার ৫০৬ জন এবং ছাত্র ছিল ২৫ হাজার ৮৮৭ জন। জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) অনুযায়ী প্রাক-প্রাথমিক স্কুলে টয়লেট ব্যবহার করছে শতকরা ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী, বাকি ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী টয়লেট ব্যবহার করে না। প্রাথমিক স্কুলে ছাত্রীরা করছে শতকরা ১৯ শতাংশ, বাকি ৮১ শতাংশ টয়লেট ব্যবহার করে না। ছাত্ররা করছে শতকরা ৫৬ শতাংশ, বাকি ৪৪ শতাংশ ছাত্র টয়লেট ব্যবহার করে না। ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/ মাদ্রাসায় ছাত্রীরা করছে শতকরা ১৩ শতাংশ, বাকি ৮৭ শতাংশ করে না। ছাত্ররা করছে শতকরা ৪৩ শতাংশ, বাকি ৫৭ শতাংশ করে না। মাধ্যমিক/উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে ছাত্রী করছে শতকরা ৫৫ শতাংশ, বাকি ৪৫ শতাংশ করে না। ছাত্ররা করছে শতকরা ৩৩ শতাংশ, বাকি ৬৭ শতাংশ করে না। এছাড়া এসব স্কুলগুলোতে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা টয়লেট রয়েছে মাত্র শতকরা ১ দশমিক ৩ শতাংশ এবং বাকি ৯৮ দশমিক ৭ শতাংশ জন্য পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থা নেই।

বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত টয়লেটগুলো বেশিরভাগ নোংরা ও দুগর্ন্ধময়। কোনো টয়লেটে হাত পরিষ্কারের জন্য সাবান বা ডিটারজেন্ট নেই। রয়েছে পর্যাপ্ত পানি সংকট। এছাড়া কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনে কোনো প্রকার টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকায় বিকল্প হিসেবে বিদ্যালয় থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো স্থানে অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সেগুলোও ব্যবহারের অনুপযোগী।
অভিভাবকরা বলেছেন, বেশিরভাগ স্কুলের টয়লেটের মান প্রথমত ভালো না। দ্বিতীয়ত টয়লেটগুলো দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করার কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ছেলে-মেয়েরা টয়লেট ব্যবহার করতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়ছে।
স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, টয়লেটে দুগর্ন্ধ ও ময়লা থাকায় তারা টয়লেটে যায় না। তাই দীর্ঘ সময় জোর করে টয়লেট থেকে নিজেদের বিরত রাখে। এতে তাদের কষ্ট সহ্য করতে হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষকলীগের নেতা শ্যামল সিংহ রায়, বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থার সমন্বয়কারী এ্যাড. মোমিনুল ইসলাম, সেফের সমন্বয়কারী মোঃ আসাদুজ্জামান, সাংস্কৃতিক কর্মী জেসমিন জামান ও যুবসেলের রিপন বিশ্বাস প্রমুখ।

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!