তেরখাদা উপজেলায় স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই, শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ সামাজিক দুরত্ব মানছে না। রাস্তা ঘাট, হাটবাজার, পাড়া মহল্লায় সব বয়সের মানুষকে মুখে মাস্ক ছাড়াই অবাধে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে। তেরখাদা উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সচেতনতা বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিলেও তা কাজে আসছে না। এরই মধ্যে আগামী অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে করোনার দ্বিতীয় ধাপে সংক্রমণের হার বেড়ে যেতে পারে। সরকারি ভাবে এমন আশংকা প্রকাশ করায় নতুন করে ভাবনায় ফেলেছে স্বাস্থ্য বিভাগকে।
সরকারের নির্দেশনা ছিল অন্তত দুই সপ্তাহ সকলকে বাড়িতে অবস্থান করা। মুখে মাস্ক ব্যবহার করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার সহ ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধৌত করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও এ উপজেলায় বেশিরভাগ মানুষ প্রথম দিকে সরকারের এ নির্দেশনা মানলেও এখন তা আর মানছে না। রাস্তাঘাট, হাট বাজার, বিভিন্ন এলাকায় সব বয়সের মানুষ অবাধে চলাফেরা করছে। এখন দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবকিছু খোলা থাকার পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। সামাজিক দুরত্ব ভুলে মানুষ পূর্বের মত চলাফেরা করছে। হাতে গোনা কয়েকজন মুখে মাস্ক ব্যবহার করলেও এ উপজেলায় শতকরা ৯০ জনের মুখে মাস্ক নেই।
তেরখাদা উপজেলা সদরের কাটেংগা, জয়সেনা, তেরখাদাসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অবাধে লোকজন চলাফেরা করছে। অনেক স্থানে দোকানপাট রাত ১১ টা পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে। বেশিরভাগ চায়ের দোকানে গায়ে গা মিশিয়ে মাস্ক ছাড়াই চায়ের কাপ হাতে নিয়ে চা, সিগারেট খেতে দেখা গেছে। বাস, টেম্পু, সিএনজি, লেগুনা, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, ভ্যান গাড়িতে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। বিকেল হলে বিভিন্ন খেলার মাঠে তরুণ বয়সের ছেলেদের মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে দল বেঁধে আড্ডা দিতে দেখা যাচ্ছে।
উপজেলা সদরের কাটেংগা বাজারের ব্যবসায়ী বাদশা শেখ, বিশ্বজিৎ সরকার, রিপন সরকারসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, ‘প্রথম প্রথম দোকানপাট খুলতাম না, এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় নিয়মিত কর্মস্থলে যাচ্ছি। এখনতো আর কোন সমস্যা দেখছি না।’
উপজেলার কাটেংগা গ্রামের ইউনুস মোল্যা, মহন মোল্যা, আছাবুরসহ কয়েকজন খেটে খাওয়া মানুষের সাথে কথা বললে তারা বলে, ‘প্রথম প্রথম ত্রাণ পেয়ে সংসার চালিয়েছি, এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই, কাজ করে দিন পার করছি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আগামী শীত মৌসুমে করোনা দ্বিতীয় ধাপে সংক্রমণের আশংকা রয়েছে, এখনই আমাদের সচেতন না হলে আক্রান্তের হার আশংকাজনক ভাবে বেড়ে যেতে পারে। এ জন্য ছোট বড় সকলকেই মুখে মাস্ক পরিধান করাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম