খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

স্পেসএক্সে প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্কের মহাকাশবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সে প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ১৪ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাইরান কাজী। মার্কিন এই কোম্পানির প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জিং ও আনন্দঘন সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া সফলভাবে শেষ করায় সবচেয়ে কমবয়সী প্রকৌশলী হিসেবে তাকে নিয়োগ দিয়েছে কোম্পানিটি।

শনিবার (১০ জুন) মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বে এরিয়ার ১৪ বছর বয়সী বিস্ময় বালক কাইরান কাজী আগামী সপ্তাহে সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক শেষ করবে। কিন্তু তার আগেই ইলন মাস্কের মহাকাশবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সে আগামী জুলাই মাসে সে প্রকৌশলী হিসেবে নতুন চাকরি শুরু করছে।

দেশটির আরেক সংবাদমাধ্যম লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের মতে, মাত্র ১১ বছর বয়সে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন কাইরান কাজী। চলতি মাসে সান্তা ক্লারা থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি শেষ করবে সে।

স্পেসেএক্সে কাজ শুরু করার জন্য মুখিয়ে আছে কাইরান। মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্য অর্জনে স্পেসএক্সকে নিজের দক্ষতা ব্যবহারের মাধ্যমে সহায়তা করবে বলে প্রত্যাশা করছে সে।

লিঙ্কডইনে কাইরান লিখেছে, ‘আমি বিশ্বের সেরা কোম্পানি স্টারলিঙ্কের প্রকৌশলী দলে একজন সফ্টওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছি। এটি এমন একটি বিরল কোম্পানি; যারা বয়সের মতো পুরোনো মানদণ্ড দিয়ে সক্ষমতা ও পরিপক্বতা বিবেচনা করেনি।’

কাইরান কাজী স্পেসএক্সে কাজ শুরু করার জন্য তার মায়ের সাথে ক্যালিফোর্নিয়ার প্লেস্যান্টন থেকে ওয়াশিংটনের রেডমন্ডে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।

লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের মতে, খবর ও চলতি ঘটনার প্রতি কাজীর প্রথম দিকে প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল। যা তার বুদ্ধিমত্তা ও নতুন নতুন বিষয়ে জানার কৌতূহলের লক্ষণ। অন্যান্য শিশুদের তুলনায় কাইরান যে ব্যতিক্রমী প্রতিভার অধিকারী, সেটির ঝলক দেখা গিয়েছিল একেবারে ছোটবেলায়। মাত্র দুই বছর বয়সে সে সম্পূর্ণ বাক্যে কথা বলতে পারতো। কিন্ডারগার্টেনে পড়াকালীন রেডিওতে শোনা খবর নিয়ে সে তার বন্ধু ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতো।

থার্ড গ্রেডে পড়ার সময় কাইরান কাজীর বয়স মাত্র ৯ বছর। তখন সে বুঝতে পারে, স্কুলের পড়াশোনা তার জন্য তেমন চ্যালেঞ্জিং নয়। ওই সময় তার বাবা-মা তাকে লাস পোসিতাস কমিউনিটি কলেজে ভর্তি করে দেয়। পরে ১১ বছর বয়সে তাকে সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটিতে স্থানান্তর করা হয়।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা কাইরানকে নিয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রচার করে। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ৯ বছর বয়সেই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্লাস শুরু করেছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিস্ময় বালক কাইরান কাজী।

যুক্তরাষ্ট্রে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর স্নাতক শেষ হয় ২২ বা তারও বেশি বয়সে। কিন্তু অস্বাভাবিক আইকিউর অধিকারী কাইরান কাজীর ক্ষেত্রে তা কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারেনি। কলেজের অভিজ্ঞতাও কখনও অদ্ভুত লাগেনি বলে জানিয়েছে কাজী।

‘আলাদা করে কলেজের অভিজ্ঞতাকে তুলনা করার মতো কিছু পাইনি। কিন্তু আমি সত্যিই তা উপভোগ করেছি। আমি অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু তৈরি করেছি। আমি মনে করি, কিছু দিন পর সেখানে আমার থাকাটা বন্ধ হয়ে যাবে।’

কম বয়সে কলেজে স্নাতক পড়ার অভিজ্ঞতার বিষয়ে কাইরান বলেছে, ‘আমার মনে হয়েছিল যে, আমি সেই স্তরে শিখছি যেটা শিখতে চাইছিলাম।’

কাইরান কাজীর মা জুলিয়া এবং বাবা মুস্তাহিদ কাজী ছোটবেলা থেকেই ছেলের ব্যতিক্রমী প্রতিভা বুঝতে পেরেছিলেন। তখন থেকেই মেধার স্বীকৃতি ও তাকে উৎসাহ দিয়ে আসছিলেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাসরত মুস্তাহিদ কাজীর গ্রামের বাড়ি সিলেট জেলায়।

কাইরানের পরিবার ব্রেইনগেইন ম্যাগাজিনকে বলেছে, তাদের ছেলের বয়স যখন ৯ বছর, তখন আইকিউ পরীক্ষায় দেখা যায়, তার আইকিউ ৯৯.৯ শতাংশেরও বেশি। বিরল মেধাবী এই শিশু গত বছর সাইবার ইন্টেলিজেন্স প্রতিষ্ঠান ব্লাকবার্ড ডট এআইয়ে মেশিন লার্নিং বিষয়ে চার মাস ইন্টার্ন করেছে।

চলতি বছরের শুরুর দিকে ১৪ বছর বয়সী কাইরান একটি ‘বড়’ চাকরির সাক্ষাৎকারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছিল। এর কয়েক সপ্তাহ পর স্পেসএক্স থেকে চাকরি অফার লেটারের একটি স্ক্রিনশট পোস্ট করে সে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!