অসাধারণ এক ম্যাচ ২–২ গোলে সমতায় থেকে গড়িয়েছিল অতিরিক্ত সময়ে। আর কোনো গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে ৫–৩ গোলে স্পেনকে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে একাধিকবার উয়েফা নেশনস লিগ জিতল পর্তুগাল। ২০১৯ সালে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে নেশনস লিগের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পর্তুগিজরা।
মার্তিন জুবিমেন্দি ২১ মিনিটে এগিয়ে দিয়েছিলেন আগেরবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে। ৫ মিনিট পর পর্তুগিজরা সমতায় ফেরে নুনো মেন্দেেজের গোলে। প্রথমার্ধের খেলা শেষ হওয়ার ঠিক আগে স্পেনকে আবার এগিয়ে দিয়েছিলেন মিকেল ওইয়ারসাবাল। ৬১ মিনিটে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর হেড সমতায় ফেরায় পর্তুগালকে।
টাইব্রেকারে পর্তুগালের হয়ে গোল করেছেন গনসালো রামোস, ভিতিনিয়া, ব্রুনো ফার্নান্দেজ, নুনো মেন্দেজ ও রুবেন নেভেস। স্পেনের হয়ে প্রথম তিন শটে গোল করেন মিকেল মেরিনো, অ্যালেক্স বায়েনা ও ইসকো। আলভারো মোরাতার নেওয়া চতুর্থ শটটি ফিরিয়ে দেন পর্তুগাল গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তা। এরপর নেভেস পঞ্চম শটে গোল করতেই নিশ্চিত হয়ে যায় পর্তুগালের জয়।
২০২৩ সালের মার্চ থেকে অপরাজিত থাকা স্পেন সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে ৫–৪ গোলে হারিয়ে মিউনিখের ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছিল।
লুইস দে লা ফুয়েন্তের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা ২১তম মিনিটে মার্তিন জুবিমেন্দির গোলে এগিয়ে গিয়ে আরেকবার মহাদেশীয় ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা জাগায়। তবে লিড বেশিক্ষণ থাকেনি। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় পর্তুগালের ফুলব্যাক নুনো মেন্দেজ সমতায় ফেরান দলকে। যে গোলের বিল্ডআপে অবদান ছিল রোনালদোরও।
বিরতির আগে আবার এগিয়ে যায় স্পেন। মাঝমাঠ থেকে পেদ্রির দুর্দান্ত পাসে গোলমুখে বল পেয়ে মিকেল ওইয়ারসাবাল স্কোরলাইন ২–১ করেন ।
আইবেরিয়া উপদ্বীপের দুই প্রতিবেশীর লড়াইটা ‘পুরোনো ও নতুনের দ্বৈরথ’ তকমা পেয়ে গিয়েছিলন ম্যাচের আগে। একদিকে ৪০ বছর বয়সী, পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, আর অন্যদিকে স্পেনের কিশোর বিস্ময় লামিনে ইয়ামাল।
ব্যালন ডি’অর জয়ের অন্যতম দাবিদার ইয়ামাল আজ সুবিধা করতে পারেননি তেমন। তবে রোনালদো ঠিকই নিজের সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন—৬১ মিনিটে কাছ থেকে হেড গোল করে পর্তুগালকে ফেরান সমতায়।
এই গোলের উৎস ছিল নুনো মেন্ডেজের ক্রস। বাঁ প্রান্ত দিয়ে উঠে এসে বারবার স্প্যানিশ রক্ষণকে ব্যতিব্যাস্ত রাখা মেন্ডেজ এবার ইয়ামালকে পেছনে ফেলেই উঠে আসেন। তাঁর নেওয়া ক্রসটি স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে একটু দিক বদলে চলে যায় ওত পেতে থাকা রোনালদোর কাছে। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ১৩৮তম গোলটি করতে ভুল করেননি সিআরসেভেন।
৮৮ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন রোনালদো। অতিরিক্ত সময়েও কোনো দলই জয়সূচক গোল খুঁজে পায়নি। ফলে শিরোপার মীমাংসা গড়ায় টাইব্রেকারে।
সেখানেই পর্তুগিজরা রাখে বরফ শীতল স্নায়ুর ছাপ—পাঁচটির সবকটি পেনাল্টি জালে জড়ায় তারা। আর তাতে ট্রফি উঠল রোনালদোর হাতেই।
খুলনা গেজেট/এইচ