অর্থপাচার মামলায় ফরিদপুরের সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) সুভাস চন্দ্র সাহা (বর্তমানে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত) ও তার স্ত্রী রীনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১৯ ডিসেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক ইসমাইল হোসেন। আগামী ২ জানুয়ারি এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
সুভাষ চন্দ্র সাহার বিরুদ্ধে বৈধ উৎস ছাড়া সাড়ে ৭ কোটি টাকার এফডিআর থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বেসরকারি ওয়ান ব্যাংকের ঢাকা ও যশোরের তিনটি শাখায় ১৯টি এফডিআরে এ অর্থ আছে বলে জানিয়েছে দুদক।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর সুভাষ দম্পতির বিরুদ্ধে রাজধানীর বংশাল থানায় মামলাটি করেছিলেন দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ। দীর্ঘ ৬ বছর পর ওই মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হলো। এ দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকে আরও মামলা রয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী রিনা চৌধুরীর যৌথ নামে ওয়ান ব্যাংকের বংশাল শাখা, এলিফ্যান্ট রোড শাখা এবং যশোরের ওয়ান ব্যাংক এফডিআর থাকার তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু তারা দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণী কিংবা আয়কর নথিতে সেসব সম্পদের কথা গোপন রেখেছেন। এমনকি দুদকের অনুসন্ধানেও ওই আয়ের যথাযথ উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গচ্ছিত টাকার মধ্যে ওয়ান ব্যাংকের বংশাল শাখার ৬টি এফডিআরে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, এলিফ্যান্ট রোড শাখায় একটি এফডিআরে ১৮ লাখ টাকা এবং যশোরের ওয়ান ব্যাংক শাখাতে ১২টি এফডিআরে ৫ কোটি ৪ লাখ টাকা পাওয়া যায়। সুদ ব্যতীত ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বিনিয়োগ পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, দুদকের তদন্তে সুভাষ চন্দ্র ও তার স্ত্রী রিনা চৌধুরীর আয়কর নথি এবং আয় সংক্রান্ত অন্যান্য রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে ৫৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯ টাকা সঞ্চয়ের হিসাব পাওয়া গেছে। সুদ ছাড়াও ৭ কোটি ৩৮ লাখ ৪৬ হাজার ৯৯১ টাকার যথাযথ হিসাব পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, আসামিরা অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ জেনেও যৌথ নামে এফডিআর হিসাবে টাকা জমা করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। দুদকের তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে