চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছেন এক নারী। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে প্রেমিক পুড়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ জহুরুল ইসলামের (৪২) বাড়িতে অবস্থান নেন। কিন্তু বাড়িতে প্রবেশ করায় জহুরুল মাস্টারের ভাইয়েরা তাকে মারধর করেন। অত্যাচার সহ্য করেও স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সেখানেই অবস্থান করছেন ওই নারী ।
ভুক্তভোগী নারী সুত্রে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের কয়া গ্রামের মোঃ ইছাহাক আলীর ছেলে পুড়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ জহুরুল ইসলামের সঙ্গে ৬ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারিরীক সম্পর্ক হয় গড়ে তোলে ওই নারীর সাথে। নিজের অপকর্ম ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এবং টাকা আয়ের জন্য ওই নারীকে জর্ডানে পাঠায়। সেখানে যেয়ে ওই নারীর আয় করা ৬ লক্ষ টাকা জহুরুল মাস্টারের একাউন্টে পাঠায়। বিদেশ থেকে বাড়ি এসে বিয়ের কথা বললে জহুরুল মাস্টার গত ১ জানুয়ারী ১ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন। বিয়ের পর জীবননগর পৌরসভার আশতলা পাড়ায় একটি বাড়ি ভাড়া করে সেখানে ওই নারীকে রাখে। গত ১০দিন আগে তার কাছে রাখা টাকার হিসেব চাইলে জহুরুল মাস্টার হিসেব না দিয়ে চলে যায়।
পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্ত্রীর মর্যাদা পেতে তার বাড়ি গেলে জহুরুল মাস্টার,তার ভাই ও তার স্ত্রী মিলে ওই নারীকে মারধর করেন।এ বিষয়ে জহুরুল মাস্টারের বিরুদ্ধে জীবননগর থানাতে একটি অভিযোগ করেছে বলে জানান ভূক্তভোগী।
সীমান্ত ইউপি সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, এ মাসের প্রথম দিকে তাদের বিয়ে হয়েছে বলে মেয়ে আমাকে জানায় এবং বিয়ের সমস্ত কাগজপত্র আমাকে দেখায়। আমি জহুরুল মাস্টারের সাথে কথা বলেছি কিন্তু সে এবিষয় অস্বিকার করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই নারী তার স্বামী জহুরুল মাস্টারের বাড়ির বারান্দায় বসে আছেন। ওই নারী বলেন, আমার সঙ্গে জহুরুল মাস্টারের বিয়ে হয়েছে, আমাকে স্ত্রী হিসেবে না মানলে আমি বিষ পান করে আত্মহত্যা করব।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে , ওই মেয়ের সঙ্গে জহুরুল মাস্টারের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। এর আগে গ্রামে বেশ কয়েকবার আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয় জনগনের হাতে ধরা পড়ে এবং বিচারও হয়। তাছাড়া জহুরুল মাস্টারের বিরুদ্ধে এ ধরণের অনৈতিক কাজের অনেক অভিযোগ রয়েছে।
একপর্যায়ে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় জহুরুল মাস্টারের বাড়িতে যেয়ে বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন । এ সময় স্থানীয় জনগণ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ ব্যাপারে জহুরুল মাস্টারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি তাকে বিয়ে করেছি এটা সঠিক কথা । কিন্তু আমি তার টাকা আত্মসাৎ করিনি। তা ছাড়া আমি তাকে দেনমোহরসহ তালাক নামা পাঠিয়ে দিয়েছি।
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাহমুদ বিন হেদায়েত সেতু বলেন, কয়া গ্রামের শাবানা নামের একটি মহিলা কীটনাশক পান করলে স্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে চিকিৎসার জন্য জীবননগর হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাকে চিকিৎসা প্রদান করে হাসপাতালে ভর্তি করে রাখা হয়েছে।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আব্দুল খালেক বলেন, এ ব্যাপারে জীবননগর থানায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে বিষয়টি তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।