সাতক্ষীরায় যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে মারপিট সহ হত্যা চেষ্টার ঘটনায় তালার শাহীনুর ইসলাম নামের পুলিশের এক এ.এস.আইকে জেল হাযতে প্রেরণ করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) মামলার ধার্য্যদিনে আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত উভয় পক্ষেন শুনানী শেষে জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে শাহীনুরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এ,এসআই মোঃ শাহীনুর ইসলাম সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের মোঃ শাহাবুদ্দীন গাজীর ছেলে। তিনি বর্তমানে বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার চরেরহাট ক্যাম্পে এ.এস.আই হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার বিপি নং : ৭৬৯৬০৫৬১৩৩।
মামলার বাদী তালা সদরের বাবর আলী শেখ’র মেয়ে ফরিদা আক্তারের ভাই আব্দুর রাজ্জাক জানান, ১৯৯৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী পারিবারিক ভাবে মোঃ শাহীনুর ইসলামের সাথে তার বোন ফরিদা আক্তারের ইসলামী শরিয়া আইন মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তার পিতা বাবর আলী শেখ জামাতা শাহীনুরকে নগদ টাকা সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র প্রদান করেন। বর্তমানে ফরিদা ও শাহীনুর দম্পত্তির ২টি মেয়ে সন্তান রয়েছে। তাদের বড় মেয়ে বিবাহিত। বড় মেয়ের ঘরে তাদের একটি সন্তানও রয়েছে।
আব্দুর রাজ্জাক আরো বলেন, বিয়ের পর তার বোনের স্বামী শাহীনুরের যৌতুকের দাবীর প্রেক্ষিতে তালা উপশহরের উপর পৈত্রিক জমি থেকে ৮ শতক জমি তার বোনকে দেয়া হয়। ওই জমির উপর বাড়ি করে তারা বসবাস করে আসছে। কিন্তু বাড়ির ওই জমি তার বোনের নামে লিখে দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বোনের স্বামী শাহীনুর ইসলাম। একপর্যায়ে ওই জমি নিজের নামে লিখে দিতে শাহীনুর তার স্ত্রীকে প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এতে ফরিদা রাজী না হওয়ায় গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর শাহীনুর ইসলাম তাকে বেধড়ক মারপিট করা সহ শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। গুরুতর আহত ফরিদাকে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করলে শাহীনুর পুলিশের অফিসার হওয়ায় তালা থানা পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা নিতে অনিহা প্রকাশ করে। এতে বাধ্য হয়ে বোন ফরিদা আক্তার বাদী হয়ে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা (পিটিশন ৫০৮/২১) দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনাল মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তালা সদর ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিলে, ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন তদন্ত পূর্বক ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
চেয়ারম্যানের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালতে মামলার (নাওশি ৮২/২২) বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধুরন্ধর শাহীনুর ইসলাম ট্রাইব্যুনাল থেকে বিভিন্ন মিথ্যে অযুহাতে একের পর এক জামিন নিতে থাকে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) মামলার ধার্য্য দিনে শাহীনুর ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে জামিনের প্রার্থনা করলে শুনানী শেষে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগাওে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই