খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ পৌষ, ১৪৩১ | ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গাজীপুরে কারখানায় আগুন : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২
  হাইকোর্টের বেশ কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম তদন্তে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৬৫

স্ত্রীর মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে প্রকাশ্যে পুলিশ কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

বাগেরহাটে যৌতুক-নির্যাতনের অভিযোগে স্ত্রীর মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার পরেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান। এমনকি পেশাগত দায়িত্বও পালন করছেন তিনি। অজানা কারণে তাকে গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ।
অন্যদিকে স্ত্রীকে নির্যাতন ও পরোকিয়া করে এক কনস্টেবলের সংসার ভাঙ্গার অভিযোগে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে মোস্তাফিজের কাছে। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান স্বাক্ষরিত ওই কৈফিয়ত  তলবের কপি ১১ ফেব্রুয়ারি মোস্তাফিজ গ্রহন করেছেন। সাত দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার কথা থাকলেও, অদ্যবদি তিনি জবাব দেননি। এই অবস্থায় মোস্তাফিজের স্ত্রী  ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষিরা জেলার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান ২০০৭ সালে কনস্টেবল পদে বাগেরহাটে যোগদান করেন। পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশের সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) হন তিনি। সেই শুরু থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাগেরহাটেই দায়িত্ব পালন করেছেন। দুই দফায় পদোন্নতির কারণে বছর খানেক বাগেরহাটের বাইরে দায়িত্ব পালন করলেও বাকি ১৬বছর একই জেলায় রয়েছেন তিনি। দীর্ঘ সময় একই জেলায় থাকায় উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। যার কারণে তাকে গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ। এরমধ্যে পুলিশ তদন্ত করে মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে প্রতিবেদনও দিয়েছে।
জানাযায়, বাগেরহাট জেলার গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত থাকাকালীন একই ইউনিটে কর্মরত নারী কনস্টবলের  সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন মোস্তাফিজ। ২০১৫ সাল থেলে ২০১৯ সাল পর্যন্ত স্বামী কনস্টবল এসএম নজরুল ইসলাম ডিউটিতে থাকা অবস্থায় নারী কনস্টবলের  বাসায় যাওয়া-আসা করতেন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হলে মোস্তাফিজের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে ২০২২ সালের ০৩ ফেব্রুয়ারি নজরুলকে তালাক প্রদান করেন । পরে ১ম স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে ২০২২ সালের ২ জুন খুলনার একটি কাজী অফিসে ওই নারী কনষ্টবল কে মোস্তাফিজ বিয়ে করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৩০ আগস্ট মোস্তাফিজের প্রথম স্ত্রী নাহিদা আক্তার মুনি বাদী হয়ে বাগেরহাট অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যৌতুক নিরোধ আইনের এই মামলায় নাহিদা উল্লেখ করেন, মোস্তাফিজ ছলছাতুরি ও ভুল বুঝিয়ে তার বাবার পেনশনের ৪৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া আরও যৌতুকের দাবিতে মানসিক নির্যাতন করে আসছিলো। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর তারিখে ৭লক্ষ টাকা দাবী করে। গত ছয় মাস ধরে সে সংসারের ভরণ-পোষনও দিচ্ছে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে মামলাতে।
এই মামলায় চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আতিকুস সামাদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের যত ততপরতা দেখা যায়, মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে একই আইনে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও থানাপুলিশ উদাসীন বলে অভিযোগ আইনজীবিদের।
বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতিন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কুশলী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। যদি কারও বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়, তাহলে অবশ্যই তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত। গ্রেপ্তার না করা আদালতের আদেশ  অবহেলার সমান।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান বলেন, মোস্তাফিজের সাথে তার পরিবারের ঝামেলা চলছে। বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি জানা নেই বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট /কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!