সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান। রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে দায়ের হওয়া জিডিতে মুরাদের বিরুদ্ধে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগ আনা হয়েছে।
ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ভার্চুয়াল টক-শোতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছিলেন প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান। এ নিয়ে তুমুল সমালোচনার মধ্যেই তার কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়। টেলিফোনে মুরাদ এক অভিনেত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেন।
এসব ঘটনার জেরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ করেন মুরাদ। পরে আওয়ামী লীগের পদও হারান তিনি। অবশ্য তার সংসদ সদস্য পদ টিকে আছে।
ধানমণ্ডি থানায় মুরাদের স্ত্রী জাহানারা জিডিতে অভিযোগ করেন, ‘বিবাদী ডা. মুরাদ হাসান (৪৮), পিতা: মৃত মতিউর রহমান তালুকদার, মাতা: মনোয়ারা বেগম, বাসা নং ৩০/এ, ফ্ল্যাট-ডি১, রোড নতুন ১৫, পুরাতন ২৮, থানা: ধানমণ্ডি, ঢাকা-এর সহিত বিগত ১৯ বছর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। বিবাহিত জীবনে আমাদের সংসারে একটি মেয়ে রামিসা ফারিহা রাজকন্যা (১৬) এবং একটি ছেলে হাসান আবরার মাহির যুবরাজ (১১) রহিয়াছে। বিবাদী আমার স্বামী।
‘তিনি বর্তমানে সরকারের সংসদ সদস্য এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কারণে-অকারণে আমাকে এবং সন্তানদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করিয়া আসিতেছে এবং হত্যার হুমকিও প্রদান করিয়া আসিতেছে।’
মুরাদের স্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘অদ্য ইং ০৬/০১/২০২২ তারিখ সময় অনুমান ২.৪৫ ঘটিকার দিকে পূর্বের ন্যায় আমাকে এবং আমার সন্তানদের গালিগালাজ করে এবং মারধর করার জন্য উদ্যত হইলে আমি ৯৯৯-এ কল করিলে ধানমন্ডি থানা পুলিশ উক্ত বাসার ঠিকানায় পৌঁছালে বিবাদী বাসা হইতে বাহির হইয়া যায়। আমি এমতাবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় আছি। বিবাদী আমাকে এবং আমার সন্তানদের যেকোনো সময় ক্ষতিসাধন করিতে পারে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্যের পর এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে মুরাদের অশালীন বক্তব্যের অডিও ফাঁস হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ৭ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন মুরাদ।
এরপর ৯ ডিসেম্বর রাতে তিনি কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ইকে ৮৫৮৫-এ তিনি প্রথমে দুবাই যান, এরপর সেখান থেকে আরেকটি ফ্লাইটে কানাডার উদ্দেশে যাত্রা করেন।
তবে টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরিয়ে দেয় কানাডীয় কর্তৃপক্ষ। মুরাদ হাসান এরপর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঢোকার চেষ্টা করেন। তবে ভিসা না থাকায় দুবাইয়ে ইমিগ্রেশনও আটকে দেয় সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীকে। দুবাইয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর ১২ ডিসেম্বর ঢাকা ফিরে আসেন মুরাদ হাসান।
খুলনা গেজেট/ এস আই