কোভিড অনেক মানুষের জীবনে পেশা বদলে দিয়েছে। হাসপাতালে আয়া হয়েছেন লোকের বাড়ির পরিচারিকা। আবার মেদিনীপুরের যাত্রা শিল্পী নিয়েছেন বাচ্চা রাখার কাজ। এভাবেই অনেক বদলে গেছে।
গত একবছর ধরে যে মানুষটাকে নিয়মিত পাড়ায় দেখেছি ভ্যানে করে ফল বেচতে, তাকে চিনতে পারতাম না, কিন্তু ভাবার চেষ্টা করতাম কোথাও যেন দেখেছি। সাহস করে জিজ্ঞেস করিনি কোনদিন।
আজকে যখন বেরোচ্ছি বাড়ি থেকে তখন একেবারেই চোখাচোখি হল। ভদ্রলোক হাসলেন। জিজ্ঞেস করলেন কেমন আছেন?
বললাম আমি তো ভালো আছি, কিন্তু আপনাকে কোথায় দেখেছি খুব চেনা লাগে! কিন্তু মনে করতে পারছিনা।
ভ্যান থেকে নেমে দাঁড়ালেন তিনি। বললেন, আপনাকে তো আমি চিনি।
বললাম কোথায় দেখেছি বলুন তো আপনাকে? মনে খুব উত্তেজনা।
উনি বললেন, দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন এর এক নম্বর প্লাটফর্মে। আমি খবর কাগজ বেচতাম। আপনি ট্রেনে ওঠার সময় আমার থেকে কাগজ নিতেন।
সব ঘটনা মনে পড়ে গেল। বললাম, আপনি কথা বলেননি কেন আজ পর্যন্ত?
উনি বললেন, কথা বলব ভাবতাম, কিন্তু অনেক সময় অনেকে বিরক্ত হন। বলেন, রাস্তার পরিচয় আবার পাড়ায় কেন? মেজাজ খারাপ করে ফেলেন। তাই ভাবলাম আপনারও যদি খারাপ লাগে। স্টেশনের হকার, পাড়ায় যদি সেটা আপনার খারাপ লাগে, তাই কথা বলিনি।
খুব দুঃখ পেলাম। বললাম, আমাকে আপনার তাই মনে হয়েছিল।
বললেন, না না তা মনে হয়নি, কিন্তু তাও কোন ঝুঁকি নিইনি সময়টা খারাপ চলছে তো। ভ্যানে ফল বিক্রি করতে ভালো লাগে না, স্টেশনে বসে খবর কাগজ বিক্রি করতাম, তার একটা আলাদা সম্মান ছিল, এখন সেই লোক পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে আওয়াজ তুলি, ভালো লাগেনা। কিন্তু সংসারধর্ম করেছি তো, সব মেনে নিতে হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই