খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  প‌বিত্র ঈদুল আজহা আজ, খুলনা গেজেটের সকল পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীকে শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক।

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দে‌শের বি‌ভিন্ন স্থা‌নে ঈদুল আজহা উদযাপন

গেজেট ডেস্ক 

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিম। শুক্রবার (৬ জুন) সকালে জেলার বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ আদায় শেষে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদ আনন্দ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভাড়ুখালী আহলে সুন্নাত আল জামায়াত জামে মসজিদে সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা মাহবুবুর রহমান। একই সময়ে বাওখোলা পূর্বপাড়া জামে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ইমামতি করেন মাওলানা মো. মোহাব্বত আলী।

ইসলামকাটি, গোয়ালচত্বর, ভাদড়া, ঘোনা, মিরগিডাঙ্গাসহ আশপাশের অন্তত ২০টি গ্রামের মুসল্লিরা এসব জামাতে অংশ নেন। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও ঈদের জামাতে শরিক হন।

স্থানীয় মুসল্লি রবিউল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরা জেলায় ২০টির অধিক গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদের নামাজ আদায় করা হচ্ছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে এই নিয়ম অনুসরণ করে আসছেন এবং আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে।

ফরিদপুর
সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১০টি গ্রামে ঈদুল আজহা উদযাপন করেছেন হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য আর আধ্যাত্মিকতায় ভরপুর এই ভিন্নধর্মী উদযাপন ঘিরে এসব গ্রামে সৃষ্টি হয়েছে ঈদের এক অনন্য আবহ।

শুক্রবার (৬ জুন) সকাল থেকে উপজেলার শেখর ও রূপাপাত ইউনিয়নের কাঁটাগড়, সহস্রাইল, দরিসহস্রাইল, মাইটকুমড়া, রাখালতলি ও গঙ্গানন্দপুরসহ ১০টি গ্রামের শতশত মানুষ ঈদুল আজহার জামাতে অংশগ্রহণ করেন। ঈদের নামাজ শেষে পশু কোরবানি ও তবারক বিতরণের মধ্য দিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন সবাই।

এই গ্রামের মানুষজন মূলত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের মাহমুদাবাদ মির্জাখিল দরবার শরিফের অনুসারী, যারা সৌদি আরবের চাঁদ দেখা ও ধর্মীয় সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তারা সৌদি সময় অনুযায়ী ঈদ উদযাপন করে আসছেন।

এবার সহস্রাইল, মাইটকুমড়া ও রাখালতলি—এই তিনটি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বৃহত্তম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সহস্রাইল উত্তরপাড়া জামে মসজিদে, যেখানে ইমামতি করেন মাওলানা রাকিবুল হাসান রাকিব। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে তিনটি জামাত হয়, যাতে অংশ নেন স্থানীয়সহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

চাঁদপুর
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে কয়েকটি গ্রামে শুক্রবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। এরা মূলত: চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরীফের অনুসারী। তারা ১৯২৮ সাল থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র ঈদুল আজহাসহ ইসলামী বিধানগুলো উদযাপন করে আসছে।

ঈদুল আজহার প্রথম জামাত সকাল ৮টায় সাদ্রা ঈদগাঁ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা যাকারিয়া আল মাদানি।

সবচেয়ে বড় জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সোয়া ৮টায় সাদ্রা হামিদিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরাসা মাঠে। এতে ইমামতি করেন মাওলানা আরিফুর রহমান সাদ্রাভী।

এ ছাড়াও হাজীগঞ্জের সমেশপুর, বলাখালসহ কয়েকটি গ্রামে পবিত্র ঈদুল আজহার জামায়াত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার কয়েকটি গ্রামে মাওলানা ইছহাক চৌধুরীর অনুসারীরা একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেন।

দিনাজপুর
অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দিনাজপুর সদর উপজেলাসহ জেলার ৬টি উপজেলায় শুক্রবার (৯ জুন) ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিদের একটি অংশ। দিনাজপুর শহরের চারুবাবুর মোড়স্থ পার্টি সেন্টারে, চিরিরবন্দর, কাহারোল, বোচাগঞ্জ, বিরল ও বিরামপুর উপজেলায় আগাম ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েকশ’ পরিবারের মানুষ ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।

শুক্রবার সকাল ৮টায় দিনাজপুর শহরের চারুবাবুর মোড়স্থ পার্টি সেন্টারে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন দিনাজপুর শহর ও শহরতলীর কয়েকটি এলাকার মানুষ। এই জামাতে পুরুষ, মহিলা ও শিশুসহ প্রায় ৩০০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। এই জামাতে ইমামতি করেন দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার মহেশপুর গ্রামে অবস্থিত ফ্যামিলি কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার প্রতিষ্ঠা পরিচালক ও নবাবগঞ্জ উপজেলার মোহাজেরপুর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা মো. আব্দুর রাজ্জাক।

এছাড়া জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার সাইতারা ইউনিয়নের রাবার ড্যাম, ফতেহজংপুর গ্রামে, কাহারোল উপজেলার জয়নন্দ গ্রামে, ১৩ মাইলে, বিরল উপজেলার পশ্চিম বনগাঁ জামে মসজিদে, বোচাগঞ্জ উপজেলার ও বিরামপুর উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের আয়ড়া দাখিল মাদরাসা মাঠে ও খয়ের বাড়ি দাখিল মাদরাসা মাঠে প্রায় ২০/২৫টি গ্রামের কয়েক’শ মানুষ আগাম ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।

রাজশাহী
সৌদির সঙ্গে মিল রেখে রাজশাহী পুঠিয়া উপজেলায় ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় উপজেলার কৃষ্ণপুর মুসলিম জামে মসজিদের ছাদের উপরে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন একটি গ্রামের কিছু মুসল্লি।

জানা গেছে, সকালে মুসল্লিরা এসে কৃষ্ণপুর ফকিরপাড়ার মুসলিম জামে মসজিদের ছাদে যান। সেখানে আগে থেকেই ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছিল। ছাদের মধ্য দিয়ে কালো পর্দা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই ইমামতিতে সামনে পুরুষ এবং পিছনে নারীরা নামাজ আদায় করেছেন। নামাজ শেষে নারীরা বাড়ি ফিরে যান। আর পুরুষরা নামাজ শেষে পশু কোরবানি করেন।

নামাজের ইমামতি করেন মো. আনোয়ার। এ সময় মুসলিম জামে মসজিদের ইমাম আবদুর রহিম গাজীসহ আট জন পুরুষ ও এক শিশুসহ দুইজন নারী নামাজে অংশ নেন। মোট ১০ জন নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে একটি গরু ও একটি ছাগল কোরবানি করা হয়।

লক্ষ্মীপুর
লক্ষ্মীপুরের ১১টি গ্রামে শুক্রবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। জেলার রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও, জয়পুরা, বিঘা, হোটাটিয়া, শরশোই, কাঞ্চনপুর; রায়পুর উপজেলার কলাকোপা এবং সদর উপজেলার বশিকপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় সহস্রাধিক মুসল্লি এ দিন ঈদের নামাজ আদায় করেন।

সকাল ৭টায় রামগঞ্জ উপজেলার খানকায়ে মাদানিয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসা, নোয়াগাঁও বাজারের দক্ষিণ-পূর্ব নোয়াগাঁও ঈদগাহ ময়দানসহ একাধিক স্থানে ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। খানকায়ে মাদানিয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসায় প্রধান জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা রুহুল আমিন।

জানা গেছে, মাওলানা ইসহাক (রহ.)-এর অনুসারীরা এসব এলাকায় বসবাস করেন। তারা সৌদি আরবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি বছর ঈদসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব পালন করে থাকেন।

নওগাঁ
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে নওগাঁর পত্নীতলায় পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করা হয়েছে। শুক্রবার (৬ জুন) সকাল ৮টায় উপজেলা সদর নজিপুর পৌর এলাকার কলোনীপাড়ায় প্রায় দেড়শ মুসল্লী ঈদের জামাত আদায় করে। এ সময় নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা কামারুজ্জামান। এতে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও ঈদের জামাতে শরিক হন।

স্থানীয় মুসল্লিরা জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদের নামাজ আদায় করা হচ্ছে। তারা গত ২০১৭ সাল থেকে এই নিয়ম অনুসরণ করে আসছেন এবং আগামীতে তা অব্যাহত থাকবে।

স্থানীয় মুসল্লিদের মতে, ‘চাঁদ দেখা গেছে, শুনেছি আমরা। স্যাটেলাইটের যুগে আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো। তাই আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করে আসছি।’ সেই ধারাবাহিকতায় এবারও সৌদি আরবের নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী শুক্রবার ঈদ উদযাপন করেন তারা।

জামালপুর
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার কাজিয়াপাড়া এলাকায় পবিত্র ঈদুল আজহার একটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৬ জুন) সকাল আটটায় উপজেলার সিধুলী ইউনিয়নের লোটাবর কাজিয়াপাড়া এলাকায় এ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

ঈদের জামাতের ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা জুবায়ের বিন জাহিদুল ইসলাম। নামাজ শেষে মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর ৩৫ গ্রামের প্রায় ৫ হাজার পরিবার আজ শুক্রবার সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদুল আযহা উদযাপন করেছে।

জেলায় ঈদের প্রধান জামায়াত সদর উপজেলার বদরপুর দরবার শরিফে সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদুল আজহার নামাজে ইমামতি করেন বদরপুর দরবার শরীফের সেজপীর আরিফ বিল্লাহ রব্বানী।

বদরপুর দরবার শরিফের খাদেম মাওলানা মো. নাজমুল হোসেন বলেন, ‘সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ১৯২৮ সাল থেকে এই অঞ্চলের মানুষ একদিন আগে রোজা ও ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা পালন করে থাকেন। সেই ধারাবাহিকতায় জেলার ৩৫টি গ্রামে আজ কোরবানি পালন করছেন’।

এ বছর ঈদ উদযাপনকারী গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে,পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ও ছোট বিঘাই, গলাচিপা উপজেলার সেনের হাওলা, পশুরবুনিয়া, নিজ হাওলা ও কানকুনি পাড়া, বাউফল উপজেলার মদনপুরা, শাপলাখালী, রাজনগর, বগা, ধাউরাভাঙ্গা, সুরদী, চন্দ্রপাড়া, দ্বি-পাশা, কনকদিয়া সাবুপুরা, বামনিকাঠী, বানাজোড়া ও আমিরাবাদ এবং কলাপাড়া উপজেলার দক্ষিণ দেবপুর, পাটুয়া, মরিচবুনিয়া, নাইয়া পট্টি, নিশানবাড়িয়া, শাফাখালী, তেগাছিয়া, ছোনখোলা ও বাদুরতলী গ্রামের এসব পরিবার আগাম ঈদুল আযহা উদযাপন করে।

চট্টগ্রাম…

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!