খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
অসহায় পরিবরে সুখ ফিরলো না

সৌদিতে নিহত যশোরের নাজমুলের বাড়িতে মাতম

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলাম নাজমুলের (২৮) বাড়ি যশোর সদর উপজেলার ঘুণী গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের কওসার মোল্লার ছেলে। প্রায় এক বছর আগে অসহায় পরিবারের সুখ ফেরাতে সৌদি আরবে পাড়ি দেন এ রেমিট্যান্স যোদ্ধা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস গত সোমবার কর্মস্থল থেকে মক্কাতে ওমরাহ পালন করতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ খবরে পরিবার জুড়ে চলছে শোকের মাতম।

পরিবারের সদস্যরা জানায়, নাজমুল হোসেন ৭ ভাইবোনের মধ্যে পঞ্চম। গত একবছর আগে সৌদি আরব যান নজরুল ইসলাম নাজমুল। সেখানে আভা কামিম শহরের একটি রেস্তোরাতে ওয়েটার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে গত ২৭ মার্চ সোমবার রাতে একটি বাসে ওমরাহ করার উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের মক্কা যাচ্ছিলেন। পথে আবহা এলাকায় বাসটি দুর্ঘটনা কবলিত হয়। বাসটিতে ৪৭ জন যাত্রী ছিল। একটি সেতুর ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে বাসটিতে আগুন ধরে যায়। এতে মারা যান ২২ জন যাত্রী। নাজমুলের সঙ্গে দুর্ঘটনায় আরো ১৩ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন।

বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের ঘুণী গ্রামে নাজমুলের বাড়িতে দেখা যায় হৃদয় বিদারক দৃশ্য। গোটা পরিবার জুড়ে চলছে শোকের মাতম। ছেলের করুণ মৃত্যুতে মা-বাবা, ভাইবোন ও স্ত্রীসহ স্বজনদের আহাজারীতে এলাকায় বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। প্রতিবেশির কোনো সান্ত্বনা তাদের কান্না থামাতে পারছে না। বাড়ির উঠানে লিচুগাছ তলায় চেয়ারে বসে মা খাদিজা বেগম সন্তান হারানোর আহাজারি করছেন। তাকে ঘিরে প্রতিবেশিরা সান্ত্বনা দিচ্ছেন। নাজমুলের মা খাদিজা বেগম বলেন, ‘আমার সোনা বাবাটা কত ভালো ছিলো। কাজকর্মের মধ্যে নামাজ পড়তো। গত সোমবার আমারে ফোন করে বলে মা, আমি ১০ দিনের ছুটি পেয়েছি। ওমরা করতে যাবো। তুমি দোয়া কর আমার জন্য।’ কিন্তু ছেলেটা আর ওমরা করতে পারলো না। তার আগেই বাস দুর্ঘটনায় আমার ছেলেটা মারা গেছে। পাশেই দাড়িয়ে ছিলো নাজমুলের বাবা কওসার মোল্লা। তিনিও অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, আমার অন্য সন্তানদের চেয়ে নাজমুল শান্ত স্বভাবের ছিল। বিদেশ যাওয়ার কয়েক মাস আগে বিয়ে করেছিলো। বউ রেখে সংসারের হাল ধরবে বলে নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে বিদেশ গেছিলো। আমার সেই ছেলেটা এভাবে চলে যাবে কখনো স্বপ্নেও ভাবেনি।

নাজমুলের চাচা আবুল কালাম বলেন, ভাইপোর মৃত্যুতে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে আমাদের। নাজমুলের শরীরের অধিকাংশই পুড়ে গেছে। তার মরদেহ স্থানীয় একটি হাসপাতালে রয়েছে। আজ ডিএনএ টেস্ট হয়েছে। আমরাও সরকারিভাবে যোগাযোগ করছি, দ্রুত নাজমুলের মরদেহ দেশে আনা হবে।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!