রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংককে মিয়ানমারের দুটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে অনুরোধ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সামরিক শাসনাধীন দেশটির ওই দুটি ব্যাংক বর্তমানে মার্কিন সরকারের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
ব্যাংক দুটি হলো- মিয়ানমার ফরেন ট্রেড ব্যাংক ও মিয়ানমার ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্সিয়াল ব্যাংক। গত জুন মাসে মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ব এই দুই ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বেশিরভাগই হয় সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে।
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে ওই ব্যাংক দুটিতে সোনালী ব্যাংকের হিসাব বন্ধের আবেদন জানায়। ৩ আগস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোনালী ব্যাংকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেয়।
এই পরিস্থিতি দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটিকে কঠিন অবস্থানে ফেলেছে। মিয়ানমার ফরেন ট্রেড ব্যাংকে সোনালী ব্যাংকের ১৭ হাজার জমা ডলার আছে। আর মিয়ানমার ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংকে আছে ২ লাখ ডলার।
সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, টাকাগুলো এখন জব্দ অবস্থায় আছে। তার মানে তারা টাকাগুলো তুলতে বা স্থানান্তর করতে পারবেন না।
অন্যদিকে মিয়ানমার ফরেন ট্রেড ব্যাংকের ১ লাখ ডলার এবং মিয়ানমার ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ১ মিলিয়ন ডলার জমা রয়েছে সোনালী ব্যাংকে।
মিয়ানমার সরকার এখন এই টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন বলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তবে সোনালী ব্যাংককে এখনই টাকা স্থানান্তর না করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা এবং তাদের আয়ের উৎসে আঘাত হানতে দেশটির বৃহত্তম এই দুই সরকারি ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র। দুটি ব্যাংকই ক্ষমতাসীন জান্তার বড় আর্থিক উৎস।
ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে এক বিৃবতিতে জানায়, মিয়ানমারে অভ্যুত্থান এবং অভ্যুত্থান-পরবর্তী সহিংসতার ব্যাপারে ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে যুক্তরাষ্ট্র ধারাবাহিকভাবে চেষ্টা করে আসছে। এ পর্যায়ে ক্ষমতাসীনদের ডলার সংগ্রহের উৎসে কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সে লক্ষ্যেই ব্যাংক দুটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের ট্রেজারি বিভাগ।
আড়াই বছর ধরে মিয়ানমারে ভয়াবহ সহিংসতা চলছে। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর কারাগারে বন্দি করা হয় এনএলডির শীর্ষ নেত্রী অং সান সু চিসহ দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে। রাজধানী নেপিদোর একটি সামরিক আদালতে সু চির বিচার চলছে এবং বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় ইতোমধ্যে তাঁর ২৫ বছর কারাবাসের সাজাও ঘোষণা করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম