খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ পৌষ, ১৪৩১ | ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  আরও ৬০ দিন বাড়ল সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা
  রমজান ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানাল আরব আমিরাত
  দেশে একজনের শরীরে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত : আইইডিসিআর

সেন্টমার্টিন ঘিরে কি হচ্ছে ?

গেজেট ডেস্ক

মিয়ানমারের দিক থেকে ২-৩ দফা গুলি ছোড়ার অজুহাতে গত ৮দিন সেন্ট মার্টিনের সঙ্গে নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভুখন্ড থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন রয়েছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন।

নতুন করে বুধবার রাত থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মর্টার শেল ও গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের সীমান্ত এলাকা। এর মধ্যেই সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারের তিনটি যুদ্ধজাহাজ। সাগরে মিয়ানমারের জলসীমায় গত দু’দিন ধরে নোঙর করে আছে জাহাজগুলো। এতে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ মানুষ। পার্শ্ববর্তী দেশে যুদ্ধের কারণে দেশের ভুখন্ড থেকে আরেকটি অংশ ৮দিন ধরে বিচ্ছিন্ন করে রাখা নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষের ক্ষোভের আরেকটি বড় কারণ, চরম এই দুঃসময়ে নৌবাহিনী, বিজিবি পুরোপুরি নির্বিকার। শুক্রবার দ্বীপে খাবার পাঠানো হয়েছে, যাত্রীবাহী একটি জাহাজে করে। সেই জাহাজের নিরাপত্তায়ও কোনো বাহিনী দেখা যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (১৪ জুন) সকালে সেন্টমার্টিন জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, মিয়ানমারের ৩টি যদ্ধজাহাজ সাগরে তাদের জলসীমায় নোঙর করে আছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের আওতাধীন সেন্টমার্টিনের বিচকর্মীদের সুপারভাইজার জয়নাল আবেদীন।

তিনি বলেন, গত রাতে মিয়ানমারের দিক থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ ভেসে এসেছে। শুক্রবার সকাল থেকে জেটিঘাট থেকে মিয়ানমারের জলসীমায় দেখা যাচ্ছে দেশটির ৩টি যুদ্ধজাহাজ নোঙর করে অবস্থান করছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, এ যুদ্ধজাহাজ মিয়ানমারের জলসীমায় গত দুদিন ধরে অবস্থান করছে। শুক্রবার সকালেও সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে জাহাজগুলো দেখতে পায় স্থানীয়রা।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গত তিনবার বাংলাদেশি ট্রলার ও স্পিডবোটে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ার ঘটনায় দ্বীপবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এবার যুদ্ধজাহাজ দেখতে পাওয়ায় নতুন করে আবারও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

॥ জাহাজে গেল ২০০ টন খাদ্যপণ্য ॥

মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাতের জেরে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে এক সপ্তাহ ধরে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংকটে পড়েছেন দ্বীপটির ১০ হাজার বাসিন্দা। সংকট মোকাবিলায় শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজে ২০০ মেট্রিক টন খাদ্যপণ্য পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে টেকনাফে আটকে পড়া দেড়শ যাত্রীও ফিরছেন সেখানে।

জানা গেছে, শুক্রবার সকালে কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে একের পর এক ট্রাক ভিড়তে দেখা যায়। এসব ট্রাকে এসেছে চাল, ডাল ও তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী। দুপুরে প্রশাসনের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ‘এমভি বারো আউলিয়া’ নামে একটি জাহাজে খাদ্যপণ্য পাঠানো হয় দ্বীপটিতে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, প্রশাসনের উদ্যোগে জাহাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই চাল ও ডাল থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য কক্সবাজার থেকে জাহাজে করে সেন্টমার্টিন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এখন আর দ্বীপে খাদ্যসংকট থাকবে না।

খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি দ্বীপে ফিরে যাচ্ছে টেকনাফে আটকেপড়া অনেক বাসিন্দা। নিরাপদে দ্বীপে ফিরে যেতে ব্যবস্থা করায় খুশি তারা। তবে তাদের দাবি, জাহাজটি যেন মিয়ানমারের সংঘাত বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত চলাচল করে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ ধরে নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় মিয়ানমার সীমান্ত থেকে বাংলাদেশি ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে। এ কারণে সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে দ্বীপটিতে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। অবশেষে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কক্সবাজার থেকে খাদ্যপণ্য নিয়ে জাহাজ আসছে। একই সঙ্গে কক্সবাজারে আটকে পড়া বাসিন্দারাও ফিরছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিয়ানমারের রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধের আঁচ লাগছে এপারের বাংলাদেশের সীমান্তের গ্রামগুলোতে। বাংলাদেশি ট্রলারগুলোকে সীমান্তের ওপার থেকে গুলি করা হচ্ছে। যদিও কারা গুলি করছে, তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!