স্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকায় ডিমের অবস্থান বরাবরই শীর্ষে। বিশেষ করে সকালের নাশতায় ডিমের ব্যবহার বহু মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। একটি ডিমে থাকে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন, ৫ গ্রাম স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসহ নানা রকম ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। এতে মোট ক্যালরির পরিমাণ প্রায় ৭২, যা উচ্চ পুষ্টিমানের কারণে শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। তবে প্রশ্ন হচ্ছে—ডিম সেদ্ধ করে খাওয়া ভালো, না ভাজি করে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে পুষ্টিবিদদের মতামত তুলে ধরা হয়েছে।
সেদ্ধ ডিম: পুষ্টিবিদদের মতে, সেদ্ধ ডিম অনেকটা নিখুঁতভাবে পুষ্টিগুণ ধরে রাখে, কারণ এতে কোনো বাড়তি উপাদান বা চর্বি যোগ করা হয় না। একটি সেদ্ধ ডিম তার স্বাভাবিক গঠন ও উপাদান বজায় রেখে হজমে সহজ এবং ক্যালরিতেও তুলনামূলক কম।
সেদ্ধ ডিমে থাকা ‘কোলিন’ নামক উপাদানটি মস্তিষ্কের বিকাশ ও সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে, যা হৃদ্রোগ প্রতিরোধে কার্যকর। পুষ্টিবিদরা বলছেন, নিয়মিত সেদ্ধ ডিম খাওয়ার অভ্যাস স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ।
ভাজা ডিম: অনেকে সেদ্ধ ডিমের চেয়ে ভাজা ডিম বেশি পছন্দ করে। সাধারণত ভাজা ডিমে পেঁয়াজ, মরিচ, ধনেপাতা, টমেটো কিংবা মাখনসহ নানা উপকরণ ব্যবহার করা হয়, যা স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরের জন্য উপকারী উপাদানও সরবরাহ করে। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের জন্য এসব উপকরণ পুষ্টিগতভাবে সহায়ক।
ভাজা ডিমে ফসফরাসের পরিমাণ বেশি থাকে, যা হাড়ের গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়া প্রোটিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের দিক দিয়ে সেদ্ধ ও ভাজা ডিমের মধ্যে পার্থক্য খুব বেশি নয়।
স্বাস্থ্যঝুঁকি: যদিও ভাজা ডিমে স্বাদ ও অতিরিক্ত কিছু পুষ্টি উপাদান যুক্ত হয়, তবুও ভাজার জন্য ব্যবহৃত তেল, বিশেষ করে সয়াবিন তেল, অনেক সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কারণ, এতে ট্রান্স ফ্যাট থাকে বেশি, যা হৃদ্রোগের সম্ভাবনা বাড়ায়। পুষ্টিবিদরা বলছেন, যদি তাজা সবজি ও স্বাস্থ্যকর উপায়ে ভাজা হয় তবে ভাজা ডিমেরও পুষ্টিগুণ বাড়ে।
পুষ্টিবিদদের মতে, সেদ্ধ ও ভাজা—উভয় ধরনের ডিমেই গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান থাকে। তবে বাড়তি চর্বি এড়িয়ে চলতে চাইলে সেদ্ধ ডিমই হতে পারে উত্তম পছন্দ। আর যদি ভাজা ডিম খাওয়া হয়, তবে তা যেন কম তেলে ও স্বাস্থ্যকর উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়, সেই দিকটাও খেয়াল রাখা জরুরি।
খুলনা গেজেট/এনএম