ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে ইউপির ভোটের ফল ঘোষণার পর সহিংসতায় নিহত শিশুর মরদেহ হেফাজতে নিয়েছে থানা পুুলিশ।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানিয়েছেন, সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে মেয়ে শিশুটির মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
শিশুর বাবা-চাচা ও স্থানীয়দের অভিযোগ, দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ গুলি চালালে শিশুটি গুলিবিদ্ধ হয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
উপজেলা বাচোর ইউনিয়নের ভাংবাড়ি বেল মার্কেটে বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
রাত ৮টা পর্যন্ত গুলিতে শিশু নিহতের বিষয়টি পুলিশ বা প্রশাসনের কেউ নিশ্চিত না করলেও সাড়ে ৮টার দিকে মরদেহ থানায় রেখে চলে যায় স্থানীয়রা। পুলিশ মরদেহ হেফাজতে নেয়।
এরপর ওসি জাহিদ ইকবাল শিশু নিহতের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। থানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মরদেহের খোঁজে রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত কেউ থানায় আসেনি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পুলিশ মরদেহ হস্তান্তর করবে।
তবে পুলিশের গুলিতেই শিশুর মৃত্যু হয়েছে কি না এ বিষয়ে তিনি এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বেল মার্কেটের পাশেই ভাংবাড়ি ভিএফ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সেখানে বুধবার হয়েছে বাচোর ইউপির ভোট।
স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকদের জানান, বিকেলে ফল ঘোষণার পর জয়ী ও পরাজিত সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। তাদের নিয়ন্ত্রণে যায় থানা পুলিশ। একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে বাজারের একটি দোকানের সামনে থাকা মায়ের কোলের শিশুটির মাথায় গুলি লাগে। শিশুটির বয়স দুই বছর।
শিশুর বাবা মো. বাদশা প্রায় অচেতন হয়ে পড়েন, মা পাগলপ্রায়। শিশুর চাচা আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, শিশুটির নাম আশা। পুলিশের গুলিতে সে ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। তার মাথার খুলি উড়ে গেছে।
তিনি ও ক্ষুব্ধ স্বজন-স্থানীয়রা মরদেহ পুলিশের গাড়ির সামনে ফেলে রেখে পথরোধ করেন। এরপর সেই গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, থানা ঘেরাও করে স্থানীয়রা শিশুর মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ ও মিছিল করেছিলে। তাদের সরিয়ে দিতে পুলিশ টিয়ারশেল ছোড়ে। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা মরদেহ থানার সামনে রেখে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে পুলিশ সদস্যরা শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়।
খুলনা গেজেট/ এস আই