সাতক্ষীরায় দিনদিন নিরাপদ খাবার পানির উৎসগুলো কমে যাচ্ছে। এগুলো টিকিয়ে রাখতে জরুরি ভিত্তিতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এখনই সবার জন্য নিরপদ সুপেয় খাবার পানি নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।
বিশ্ব পানি দিবস উদযাপন উপলক্ষে সোমবার (৩০ মে) সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া আমতলা মোড়স্থ বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন স্বদেশ’র সভাকক্ষে এএলআরডি’র সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
মানবাধিকারকর্মী মাধব চন্দ্র দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সমাজকর্মী শেখ আজহার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও পৌর কাউন্সিলার কায়ছারুজ্জামান হিমেল।
সভায় আলোকচবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা। সুন্দরবন সংলগ্ন এই জেলা মাছ, কৃষি, প্রাণবৈচিত্র্যের অন্যতম আবাসভূমি। জেলার প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ এখন সুপেয় নিরাপদ খাবার পানির সংকটে ভুগছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এখানকার ভূ-প্রকৃতি যেমন পরিবর্তীত হয়েছে, নাব্যতা হারিয়েছে বড় নদী, শাখা নদী, তেমনি জলাবদ্ধতার শিকার এখানকার অধিবাসীবৃন্দ। হারিয়ে গেছে বহু প্রজাতির ধান, মাছ, নষ্ট হচ্ছে কৃষি। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি সংকট।
এখানকার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ, দেবহাটা, তালা, কলারোয়া ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন অঞ্চলে আর্সেনিকের ফলে এবং ভূ-গর্ভস্থ পানি সংকটের ফলে সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। বিশেষত, সরাসরি উপকূলে বসবাসকারী মানুষের দুর্ভোগ অবর্ণনীয়। এখনই সকলের জন্য নিরপদ সুপেয় খাবার পানি নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আলোচকবৃন্দ সভায় সকল নাগরিকের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানি নিশ্চিতহ করতে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন। সুপারিশসমূহের মধ্যে রয়েছে, জেলার সকল প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ করা, পৌরসভার পানি নীতি সংস্কার ও বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি পানি অপব্যবহার রোধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে। গভীর নলকূপ স্থাপন ও ব্যবহারে নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি জাতীয় পানি নীতিমালা সংস্কার, পরিমার্জন, পরিবর্ধন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
সভায় অন্যান্যেও মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাসদ, সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলী নুর খান বাবুল, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জ্যোতি দত্ত, উন্নয়নকর্মী হেড’ নির্বাহী পরিচালক লুইস রানা গাইন, সিডো’র প্রধান নির্বাহী শ্যামল বিশ্বাস, সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ আফজাল হোসেন, মৃত্তিকার নির্বাহী পরিচালক আবদুস সালাম, প্রভার নির্বাহী পরিচালক শাম্মী আক্তার কুমকুম প্রমুখ।