পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন কলাগাছিয়া টহলফাঁড়ি এলাকায় বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জেলে-বাওয়ালীদেরকে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলে-বাওয়ালীদের পক্ষে এই অভিযোগ করেন শ্যামনগর উপজেলার কলবাড়ি গ্রামের নজু গাজীর ছেলে ভুক্তভোগী শহীদুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা জেলে-বাওয়ালীরা বনবিভাগ থেকে পাশ নিয়ে বৈধভাবে সুন্দরবনের মাছ, কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। কিন্ত গত ২৪ সেপ্টেম্বর আমার ভগ্নিপতি শহিদুল ইসলাম সুন্দরবন থেকে মাছ ধরে বাড়ি ফেরার পথে কলাগাছিয়া টহল ফাঁড়ির ওসি মনিরুল ইসলাম কোন কারণ ছাড়াই তাকে আটক করেন। পরে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) এম.এ হাসানের মাধ্যমে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানার কারণ জানতে চাওয়ায় ওসি মনিরুল ও এসিএফ এম.এ হাসান আমিসহ অন্যান্য জেলে বাওয়ালীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করেন। একপর্যায়ে বন কর্মকর্তারা আমাদেও বৈধ পাশ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করতে থাকেন।
তিনি আরো বলেন, সুন্দরবনে মাছ, কাঁকড়া ধরা আমাদের পৈত্রিক পেশা। দীর্ঘকাল ধরে আমরা নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। ইতিপূর্বে আমরা বন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাশ নিয়ে মাছ, কাঁকড়া ধরতাম। কিন্তু বর্তমানে পাশ নেওয়ার পরও টাকা না দিলে কলাগাছিয়া এলাকা পার হতে দেন না ওসি মনিরুল। নৌকা প্রতি গোন হিসেবে ৫শ’ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত তাকে ঘুষ দিতে হয়। বুড়িগোয়ালিনী-গাবুরা এলাকার প্রায় হাজারো জেলে-বাওয়ালীরা বর্তমানে কলাগাছিয়ার ওসি ও সাতক্ষীরা রেঞ্জের এসিএফ এর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন। ফলে অনেকেই সুন্দরবন না গিয়ে বেকার সময় কাটাচ্ছেন। এতে করে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম হতাশার মধ্যে দিন পার করছি।
শহীদুল ইসলাম আরো বলেন, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না করা হলে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকুলের প্রায় দেড় হাজার জেলে-বাওয়ালীরা কর্মহীন হয়ে পড়বেন। যে কারণে অর্থ অভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করতে হবে আমাদের।
তিনি অবিলম্বে কলাগাছিয়ার ওসি ও সাতক্ষীরা রেঞ্চের এসিএফ এর হয়রানির হাত থেকে জেলে-বাওয়ালীদের রক্ষার দাবিতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
তবে, এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারি বনসংরক্ষক এমএ হাসান জানান, তিনিসহ কলাগাছিয়া বনফাঁড়ির ওসি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেয়া হচ্ছে তা আদৌ সত্য নয়। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে ও বানোয়াট। তিনি এ সময় তার অফিসে এ সংক্রান্ত সকল বৈধ কাগজ পত্র রয়েছে বলে দাবী করে সেগুলো দেখে শুনে নিউজ করার অনুরোধ জানান।
খুলনা গেজেট/এএ