গত তিন মাস আগে সুন্দরবনের পাশ, পারমিট বন্ধ ঘোষণা করে দেয় বন বিভাগ। ১ সেপ্টেম্বরে আবারও সুন্দরবনের সকল ধরণের পাশ পারমিট দেয় বন বিভাগ। কিন্তু তাতেও কাটেনি জেলেদের দুর্দশা
মোংলা উপজেলার সুন্দরবনের কোল ঘেষে গড়ে ওঠা চিলা ইউনিয়নের মৎস্য পল্লিতে গিয়ে দেখা যায় দরিদ্র জেলেদের করুন পরিস্থিতি।
এ বিষয় জেলেদের সাথে আলাপ করলে তারা বলেন দীর্ঘ তিন মাস পর সুন্দরবনের সকল ধরণের পাশ পারমিট দিলেও আশা অনুরুপ মাছ, কাঁকড়া হচ্ছে না। কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, সুন্দরবন যখন বন্ধ ছিলো তখন অবৈধভাবে প্রবেশ করে কিছু সংখ্যাক অসাধু জেলেরা সুন্দরবনের ছোট, ছোট খালে অবৈধ ভেষাল জাল ও কীটনাশক দিয়ে মাছ শিকার করতো এবং বর্তমানে পাশ পারমিট দিলেও যেসব জালের পারমিট আছে সে জালের ভিতরে লুকিয়ে অবৈধ জাল ও কীটনাশক নিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনে। যার কারণে মাছের দেখা পাওয়াই এখন ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
আমাদের দাবি যারা এসকল কাজের সাথে জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।
জেলেরা আরো বলেন, সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য মহাজন ও মাছ ব্যবসায়িদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চাহিদা মতো না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছি আমরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে বলেন, যে সময় পাশ পারমিট বন্ধ ছিল, সে সময় ষ্টেশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা উৎকোচের বিনিময় অবৈধভাবে জেলেদেরকে সুন্দরবনে ডুকতে দিতো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের চাঁদপাই ষ্টেশন কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান বলেন, বিশেষ করে আমরা চরপাটার জালে এক ইঞ্চির নিচে পাশ দিচ্ছি না। এবার আমাদের কড়াকড়ি আরোপ। আমরা যেটা চেক করতেছি সেইটার পাশে রং মেখে দিচ্ছি। আমরা সব নৌকাকেই চেক করতেছি। আমরা যখন পারমিট দেই তখন জেলেরা চেকিং করার পরে সুন্দরবনে প্রবেশ করে, সেই সাথে আমাদের যে সকল টহল ফাঁড়ি আছে তারাও নিয়মিত চেকিং এ-র মাধ্যমে জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশ করতে দেয়।
উৎকোচের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা ইতিপূর্বে সুন্দরবন নানা ধরনের অপর্কমের সাথে জড়িত ছিলো তারায় এধরণের অভিযোগ করছে। আগে কি করছে না করছে কিন্তু এখন খোঁজ নিয়ে দেখেন পাবেন না।
উল্লেখ্য, গত ২/৩ দিন আগে কোন ধরণের পাস পারমিট ছাড়া গোপনে সুন্দরবনে ঢুকে বনের উরুবুনিয়া খালের নলবুনিয়া এলাকায় বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলে একদল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির প্রধান করা হয়েছে চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমানকে। অপর দুই সদস্য হলেন জোংড়া টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন ও চাঁদপাই রেঞ্জ কার্যালয়ের ফরেস্টার মিজানুর রহমান।