খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ আষাঢ়, ১৪৩১ | ২৬ জুন, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক আইজিপি বেনজিরের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে

সুন্দরবনে প্রবেশে বাড়তে পারে পর্যটকদের অপেক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র আসন সংখ্যার শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহার করে খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তবে সুন্দরবনের পর্যটন স্টপ আগামী ১৯ আগস্ট খোলার বিষয়ে কোন নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আসেনি বলে জানিয়েছেন বনবিভাগ। ফলে ১৯ আগস্ট পর্যটন স্পট খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

সুন্দরবনে প্রবেশে পর্যটকদের অপেক্ষা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
এদিকে সুন্দরবনের পর্যটন খোলার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত পাননি ট্যুর অপারেটররাও। আগামী ১৬ আগস্ট বনবিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করবেন ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন।

ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আযম ডেভিড বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে ২০২০ সালের মার্চ থেকে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এর মাঝে মৌসুমে অবশ্য কয়েক মাস খোলা ছিল। পরবর্তীতে এপ্রিলে ফের বন্ধ হয়ে যায়। যা এখনও বন্ধ রয়েছে। আগামী ১৯ আগস্ট দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হচ্ছে। অথচ সুন্দরবন খুলবে কি-না সে বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। আগামী ১৬ আগস্ট ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের পক্ষ থেকে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করা হবে।

তিনি বলেন, সংগঠনের তালিকাভুক্ত ৬৩টি ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও বিচ্ছিন্ন ভাবে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সবমিলিয়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠান হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলেই দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। আর্থিক সংকটে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী কমিয়েছে। অনেকেই বেকার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রায় দু’বছর বনে আমরা যাই না, সেক্ষত্রে কি বন সম্পূর্ণভাবে রক্ষা পেয়েছে। আমারতো মনে হয় আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। চোরা শিকারীরা ঠিকই সক্রিয়। বিষ দিয়ে মৎস্য শিকার হচ্ছে। অথচ আমরা যদি যেতাম তাহলে ওইসব শিকারীদের জন্য আরও বেশি সমস্যা হতো। আমাদের দেখে তারা পালিয়ে যেত। সাহস পেতো না। কিন্তু এখন নির্বিঘেœ কাজ করছে। তিনি দ্রুত পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডঃ আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্র খুললেও সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র ১৯ আগস্ট খুলছে না। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে সকল প্রকাশ মৎস্য ও কাকড়া শিকার বন্ধ রাখার ঘোষণা রয়েছে আগে থেকেই। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্রও পড়ছে। ফলে ১ সেপ্টেম্বরের আগে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র খোলার সম্ভাবনা নেই।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সাধারণত জুলাই-আগস্ট মাছের প্রজনন মৌসুম। তবে এবার জুন মাস থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে মৎস্য শিকার ও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর থেকে মৎস্য শিকারের জন্য পাশ পারমিট দেওয়া হবে। তবে পর্যটন কেন্দ্র খোলার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।

খুলনা আঞ্চলিক বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে সুন্দরবন খোলার ব্যাপারে কোন নির্দেশনা পায়নি। সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ হয়েছিল পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায়। যেহেতু আমরা নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আওতায় রয়েছি, আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে কোন নির্দেশনা আসেনি। সুন্দরবনের ক্ষেত্রে আগামী ১৯ আগস্ট খোলার সম্ভাবনা নেই। সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র বন্ধের সময় আরও বাড়তে পারে। তবে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত আসলে পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে।

উলে­খ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমনের কারণে গত বছর ১৯ মার্চ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৭ মাস সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে খুলে দেওয়া হয়। ফের করোনাভাইরাসের সংক্রমনের ঝুঁকি এড়াতে চলতি বছরের ৩ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বনবিভাগ। করোনা সংক্রমণরোধে তা বাড়ানো হয়। এখনও বন্ধ রয়েছে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!