স্বজন হারানোর আহাজারি আর কান্নায় বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে সুগন্ধা নদীর পাড়। চারিদিকে শুধু পোড়া লাশের গন্ধ। শুক্রবার সকাল থেকে নদী তীরের গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় অগ্নিদগ্ধদের স্বজনরা ভিড় করছেন।
আগুন লাগার খবর শুনে সুগন্ধা নদীর তীরে জড়ো হন শত শত মানুষ। সেখানে আসেন নিখোঁজ ও পুড়ে অঙ্গার হওয়া নিহতদের স্বজনরাও। লঞ্চটিতে থাকা স্বজনের ভাগ্য কী ঘটেছে তা দেখতে ধৈর্য যেন আর বাঁধ মানছিল না তাদের। প্রিয় স্বজন বেঁচে আছেন না মরে গেছেন তা দেখতে মরদেহ রাখা নৌযানের চারপাশে ভিড় করছেন তারা। ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করছেন মাঝ নদীতে আগুন লাগা লঞ্চের কাছে। তাদের কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে সুগন্ধা পাড় এলাকা।
এর আগে, শুক্রবার ভোর ৩ টার দিকে হঠাৎ যাত্রীরা আগুন দেখে চিৎকার শুরু করেন। কিন্তু কিছু বুঝে উঠার আগেই লঞ্চটিতে আগুন ধরে যায়। এসময় কিছু যাত্রীরা লাফিয়ে নদীতে পড়ে সাতরে পাড়ে উঠে। এছাড়া স্থানীয় ট্রলার চালকরা গিয়ে লঞ্চ ও নদী থেকে বেশ কিছু যাত্রীদের উদ্ধার করে।
লঞ্চের যাত্রী মো. মোহসীন জানান, ভোর ৩ টার দিকে হঠাৎ নিচ থেকে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখি। এরপর আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় আমি ৩ তলা থেকে লাফ দিয়ে প্রাণে বেচে যাই।
ঘটনার পর ভোর ৬ টার দিকে ঝালকাঠির কলেজ খেয়াঘাট এলাকায় নদী থেকে ১৩ বছরের এক কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তার সঙ্গে থাকা মা জানান, তারা ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশ্যে মা ও মেয়ে এক সঙ্গে লঞ্চে উঠেছিল। কিন্তু আগুন লাগার পর মেয়েকে পাওয়া যায়নি। খুঁজতে খুঁজতে এখানে এসে মেয়েকে পেয়েছি।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে গিয়ে জানা যায় ভোর ৭টা নাগাদ ৬৬ জন ভর্তি হয়ে গুরুতর আহতদের বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বে থাকা বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, এখনো উদ্ধার কাজ চলছে। এখানে মোট ৫টি ইউনিট এ কাজে অংশ নিয়েছে। আগুন নিভানো হলেও উদ্ধার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত কিছুই বলা যাচ্ছে না।
খুলনা গেজেট/এনএম