বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) থেকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। শনিবার (১৪ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে তাকে কেবিনে নেওয়া হয়। এর আগে রাত ৯টার দিকে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল। তখন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, ‘ম্যাডামকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে। জরুরি চিকিৎসা শেষে আবার তাকে কেবিনে নিয়ে আসা হবে। নতুন করে ইসিজি, এক্স-রেসহ কয়েকটি টেস্ট করা হয়েছে। প্যারামিটারগুলো ওঠানামা করছে।’
তিনি জানান, এর আগেও কয়েকবার অল্প সময়ের জন্য খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা শেষে আবার কেবিনে নিয়ে আসা হয়। এখন অবস্থা ভালো-খারাপ কোনোটাই বলা যাবে না। বোর্ড তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনও উদ্বিগ্ন। কারণ তিনি শঙ্কামুক্ত নন। যেকোনো সময় পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক দুর্বলতা থাকায় অনেক ওষুধ খেতে চান না। আর ওনাকে সব সময় স্যালাইন ও ইনজেকশনের ওপর থাকতে হচ্ছে। দুই দিন আগে রক্তের হিমোগ্লোবিন কিছুটা উন্নতি হলেও ফের কিছুটা কমছে। ইনসুলিন দিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই চিকিৎসক জানান, নানা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে লিভারের সমস্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। তবে লিভার প্রতিস্থাপন ছাড়া স্থায়ী কোনো সমাধান নেই। স্বাস্থ্যের বিভিন্ন রিপোর্ট দেখে বোর্ড বৈঠক করে চিকিৎসায় পরিবর্তন আনে প্রতিনিয়ত। কিছু রিপোর্ট একাধিক হাসপাতালে টেস্ট করা হচ্ছে। বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। লিভারের পাশাপাশি তার কিডনি জটিলতা ও ডায়াবেটিসের মাত্রাও বাড়ছে। কিডনির ক্রিয়েটিনিন মাঝেমধ্যে বর্ডার লাইনের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে। ফলে এটিকে কমাতে গেলে আরেকটিতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। বোর্ড জরুরিভিত্তিতে তার লিভার প্রতিস্থাপনে জোর দিচ্ছে, যা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এসবের বিস্তারিত মেডিকেল বোর্ড সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের শয্যা পাশে এখনও রয়েছেন তার ছোট পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান সিঁথি। তিনি গুলশানের বাসা থেকে শাশুড়ির জন্য খাবার রান্না করে নিয়ে যান। ৭৮ বছর বয়সি খালেদা জিয়া কিডনি, ফুসফুস, হৃদরোগ, লিভার জটিলতায় ভুগছেন। গত ৯ আগস্ট রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্থায়ী মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবিতে ঢাকায় অনশন কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
রবিবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন ১২ দলের নেতারা। এরপর তারা একটি প্রেস ব্রিফিং করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
খুলনা গেজেট/এইচ