গত টি২০ বিশ্বকাপের পর থেকেই শুরু হয়ে গেছে ২০২৪ সালের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি। সাকিব আল হাসান মোটামুটি দল গুছিয়ে রেখেছেন। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও গত এক বছরে খেলোয়াড়দের দেখে নিয়েছেন। ২০২৩ সালের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে এক-দু’জনকে বাদও দেওয়া হয়েছে। বিপিএলের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজের দলে ফেরানো হয়েছে এনামুল হক বিজয় ও নাঈম শেখকে। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠেয় হোম সিরিজ পর্যন্ত চলবে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজ শেষ করে বিশ্বকাপ দল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে উড়াল দেবেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ডালাসে তাঁবু ফেলবেন কন্ডিশনিং ক্যাম্পের পাশাপাশি স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিনটি ম্যাচ খেলতে। বাংলাদেশের জন্য প্রস্তুতির সিরিজ হলেও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যেটি বড় দলের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি২০ সিরিজ খেলা। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকেও বিশ্বকাপ পরবর্তী সময়ে আতিথেয়তা দেবে বিসিবি।
প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে যুক্তরাষ্ট্রে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে চেয়েছিলেন কন্ডিশনিং ক্যাম্পের অংশ হিসেবে। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ থেকে এই প্রস্তাবনা পরিচালনা পর্ষদে উপস্থাপন করা হলে সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেন। পরে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয় দ্বিপক্ষীয় সিরিজের। বিসিবির প্রস্তাবে স্বাগতিক বোর্ডের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া মেলে।
বিসিবির একটি সূত্র জানায়, ডালাসে যুক্তরাষ্ট্র টি২০ দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজ খেলতে রাজি হয়েছে দেশটি। সিরিজ খেলা নিশ্চিত হলেও ম্যাচের দিন-তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। জুনে অনুষ্ঠেয় ২০ দলের টি২০ বিশ্বকাপে স্বাগতিক হিসেবে খেলবে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বকাপের আগে তারাও বড় দলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার চেষ্টা করছিল। বিসিবির কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়ে লুফে নেয়। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সিরিজের ব্যাপারে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সিইও দেখেছেন। যেহেতু দ্বিপক্ষীয় সিরিজের প্রস্তাবনা গেছে, সেহেতু ইতিবাচকই হওয়ার কথা। ওদেরও এইচপি বা ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিরিজ খেলার সুযোগ দিতে হবে।’
এ বছরের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে আয়োজন করছে টি২০ বিশ্বকাপ। চার গ্রুপে হবে ২০ দলের খেলা। ভারত, পাকিস্তান, আয়ারল্যান্ড, কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র পড়েছে ‘এ’ গ্রুপে। ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও নেদারল্যান্ডস। ফলে ‘এ’ ও ‘ডি’ গ্রুপের দলের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচ হলে ক্ষতি নেই। এ ছাড়া সিরিজটি ডালাসে খেলার কারণ বিশ্বকাপের ম্যাচ ভেন্যুর পরিচিতি পাওয়া।
চাকচিক্যের শহর ডালাসে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার ম্যাচ দিয়ে ২ জুন টুর্নামেন্টের পর্দা উঠবে। বাংলাদেশও নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে ডালাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮ জুন। শুরুটা ভালো করতে ডালাসের কন্ডিশন জেনে নেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের পরের ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিউইয়র্কে। নেদারল্যান্ডস আর নেপালের সঙ্গে ম্যাচ দুটি হবে কিংসটাউনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বীপ দেশ জ্যামাইকার এ ভেন্যু সম্পর্কে ধারণা আছে সাকিবদের। এই কন্ডিশন নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই। সেদিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ভেন্যু দুটি অপরিচিত। কারণ ডালাস বা নিউইয়ার্কে আগে খেলেনি বাংলাদেশ। ফ্লোরিডায় ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে দুটি টি২০ ম্যাচ খেলেছিল ২০১৮ সালে। সাকিবরা দুটি ম্যাচই জিতেছিলেন। আশা করা হচ্ছে ডালাস এবং নিউইয়র্কের কন্ডিশনেও ভালো করবে বাংলাদেশ।
খুলনা গেজেট/এনএম