সিরাজগঞ্জে দুটি হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া দুই শিশুর মধ্যে একজনকে জীবিত ও আরেকজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। সলঙ্গা থানা পুলিশ থানার আলোকয়িদা গ্রামের মৃত সোলায়মানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুই শিশুকে উদ্ধার করে। একই সময় ঘটনার সাথে জড়িত চোর চক্রের ৬ জন নারী এবং একজন পুরুষ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলো সলঙ্গা থানার আলোকদিয়া গ্রামের মৃত সোলায়মান হোসেনের স্ত্রী সয়রন বিবি, তার মেয়ে আলপনা খাতুন, ছেলে রবিউল ইসলাম, রবিউলের স্ত্রী ময়না খাতুন, একই গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মিনা খাতুন ও একই গ্রামের রেজাউলের স্ত্রী খাদিজা খাতুন ও গ্রাম ডাক্তার শরিফুল ইসলাম। এর আগে গত মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতাল ২৩ দিন বয়সী এক বাচ্চা ও শনিবার বিকেলে সলঙ্গা থানার সাকাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে জন্মের ৬ ঘণ্টা পর আরেক বাচ্চা চুরি হয়েছিল।
সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের জিলানী জানান, শনিবার সকালে তাড়াশের নওগা গ্রামের মাজেমের স্ত্রী সমিতা খাতুন সিজারের মাধ্যমে ছেলে বাচ্চা জন্ম দেন। দুপুরের পর বোরকা পরিহিত এক নারী নার্স পরিচয় দিয়ে সমিতা ও তার স্বজনদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। বিকেল তিনটার দিকে নার্স পরিচয়ধারী ওই নারী বাচ্চার নানীর কাছ থেকে বাচ্চাকে কান্না থামানোর কথা বলে কোলে নেয়। এরপর হাঁটতে হাঁটতে হাসপাতালের বারান্দায় আসে এবং নানীকে ভিতরে চলে যেতে বলে।
শিশুটির নানী কেবিনের ভিতরে চলে যাওয়া মাত্র নার্স পরিচয়ধারী নারী বাচ্চাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর পুলিশ এসে হাসপাতাল থেকে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে। সেখানে দেখা যায় এক নারী বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ ফুটেজে দেখা নারীকে শনাক্ত করে রাত ১০টার দিকে সলঙ্গা থানার আলোকদিয়া গ্রামে সোলায়মানের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বাচ্চাটি উদ্ধার এবং ৭ জনকে আটক করা হয়।
এরপর ঘটনাস্থলেই তাদেরকে গত মঙ্গলবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতাল থেকে উল্লাপাড়ার উপজেলার দুর্গানগর ইউপির ভাদালিয়া গ্রামের চয়ন ইসলাম ও মঞ্জুয়ারা বেগমের ২৩ দিন বয়সী শিশু বাচ্চা চুরির বিষয়ে জেরা করা হয়। এক পর্যায়ে চোরচক্রের সদস্যরা সেই বাচ্চাটিও চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন।
পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে ওই বাড়ির একটি ঘরের ধানের ঢোলের ভিতর থেকে মৃত অবস্থায় আরেক বাচ্চা উদ্ধার করা হয়। তবে কেন, কি কারণে তারা চুরি করেছে সে বিষয়ে এখনো মুখ খোলেনি। তিনি আরো জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় মামলা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম