অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পারিবারিক কলহের শিকার হয়ে তরুণী হত্যার ঘটনা ঘটেছে। মর্মান্তিক এ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরেই সরব স্থানীয় পুলিশ বাহিনী। সাবাহ হাফিজ (২৩) নামের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই তরুণীর মরদেহ ১৪ অক্টোবর সকালে সিডনির ওয়েন্টওর্থভিলের লেন স্ট্রিটের একটি বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। সাবাহকে হত্যার দায়ে ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত তাঁর স্বামী অ্যাডাম কিউরেটনকে (২৪) আটক করেছে পুলিশ।
গত বুধবার (১৪ অক্টোবর) মধ্যরাতের এ ঘটনার পর প্রাথমিক তদন্তে তরুণীর পরিচয় মিললেও তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কি না, এ নিয়ে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে জানা যায়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সোহান হাফিজের মেয়ে সাবাহ হাফিজ। তিনি অস্ট্রেলিয়ার একজন উঠতি মডেল ও অভিনেত্রী। তাঁর বাবার আদিবাস বৃহত্তর ময়মনসিংহে। অস্ট্রেলিয়া অভিবাসনের আগে তাঁরা রাজধানীর ঝিগাতলায় বসবাস করতেন। সাবাহ হাফিজের জন্ম অস্ট্রেলিয়ায়।
সাবাহ হাফিজদের এক পারিবারিক বন্ধু এ প্রতিবেদককে জানান, সাবাহর আকস্মিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবার। সাবাহর বাবা প্রায় ৪৩ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। সিডনির ওয়েন্টওর্থভিলের পার্শ্ববর্তী এলাকাতেই বহু বছর ধরে বাস করছিল তাঁদের পরিবার। পরে অ্যাডামের সঙ্গে প্রণয় ঘটলে বিয়ে করে তাঁর সঙ্গেই বসবাস শুরু করেন সাবাহ। কিন্তু পরিবার এই বিয়েসংক্রান্ত কিছুই জানত না। আজ মঙ্গলবার সাবাহর জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়েছে সিডনির রুকউড কবরস্থানে।
ঘটনার দিন রাত প্রায় দুইটা নাগাদ পুলিশের জরুরি সেবায় কল করেন জ্যাক উইলসন নামের এক ব্যক্তি। এরপর পুলিশকে সঙ্গে নিয়েই জ্যাক সাবাহর বাসায় যান। জ্যাক পুলিশকে জানান, তিনি কয়েক সপ্তাহ ধরে সাবাহ ও অ্যাডামের সঙ্গে তাঁদের বাড়িতে বসবাস করছিলেন। তবে ঘটনার দিন রাতে তিনি তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে অন্য জায়গায় ছিলেন। রাত দুইটায় অ্যাডাম জ্যাককে ফোন দিয়ে বলেন, ‘সে (সাবাহ) নিশ্বাস নিচ্ছে না, সে হয়তো মারা গেছে।’ জ্যাক আরও বলেন, ‘আমি প্রথমে বিশ্বাস করিনি, কিন্তু অ্যাডামের কথা আমার কাছে পাগলের মতো মনে হচ্ছিল। আমার সন্দেহ হয়, আমি পুলিশে খবর দিই।’
পুলিশ সাবাহকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সাইমন গ্লাসার জানিয়েছেন, হত্যার আগে সাবাহকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছিল বলে প্রমাণ রয়েছে, তবে তিনি কীভাবে মারা গেছেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
খুলনা গেজেট/কেএম