সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে ৫৮ জনের পরিবর্তে রয়েছেন ৩২ জন চিকিৎসক। এছাড়া বেশ কয়েকজন অধ্যাপক ও সহকারি অধ্যাপক চিকিৎসা সেবায় অনিয়মিত। রয়েছে সেবিকা সংকট। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা সেবা গ্রহীতাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সামেক হাসপাতালের অনিয়মিত শিক্ষক চিকিৎসকগণদের মধ্যে ফিজিওলজি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ডাঃ জাহিদ হাসান খান (আসেন না), কমিউনিটি মেডিসিনের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ সামসুদা বেগম, সার্জারী বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোঃ আতিকুল ইসলাম (আসেন না), চক্ষু বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আলমগীর কবীর (অনিয়মিত), নিওরোলজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল আলীম, ইউরোলজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মোজাম্মেল হক ও বায়ো কেমিষ্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ সুনীল কৃষ্ণ বল।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান অফিস সহকারি (বড় বাবু) স্বদেশ রায় বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে ৫৮ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে রয়েছেন ৩২ জন। এ ছাড়া সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন চিকিৎসক প্রয়োজন অনুযায়ি চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। কোভিডের দায়িত্ব পালনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে সাতজন সহকারি সার্জন দায়িত্ব পালন করে থাকেন। ইএমও হিসেবে পাঁচজন, আইমএও হিসেবে দুইজন ও এনেসথেসিষ্ট হিসেবে একজন দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তবে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক পূরুণে কোন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে তার জানা নেই। এ ছাড়া ১৬৫ জন স্টাফ নার্স থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ১৩৫ জন। চারজন নার্সিং সুপার ভাইজার রয়েছে। তবে শিঘ্রেই ১০৬ জন স্টাফ নার্স যোগদান করার কথা রয়েছে।
মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, সেখানে প্রভাষক, সহকারি অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক হিসেবে বর্তমানে ৫৩ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার সঙ্গে যুক্ত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সামেক হাসপাতালের বহিঃবিভাগে অনেক চিকিৎস্যকের নেম প্লেট টানানো থাকলেও তারা অনেকেই সেখনে রোগী দেখেন না। অনেকে রোগী দেখলেও অনিয়মিত। হাসপাতলের ফিজিওলজি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ডাঃ জাহিদ হাসান খান (আসেন না), কমিউনিটি মেডিসিনের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ সামসুদা বেগম (অনিয়মিত), সার্জারী বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোঃ আতিকুল ইসলাম (আসেন না), চক্ষু বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আলমগীর কবীর (অনিয়মিত), নিওরোলজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল আলীম (সপ্তাহে এক দিন), ইউরোলজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মোজাম্মেল হক (সপ্তাহে দুই দিন) ও বায়ো কেমিষ্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ সুনীল কৃষ্ণ বল (সপ্তাহে দুই দিন) নিয়মিত রোগী দেখেন না। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা চিকিৎস্যকদের নিয়মিত না পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। ফলে দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা বাধ্য হয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সামেক হাসপাতালের একজন ষ্টাফ জানান, মেডিকেল কলেজ থেকে হাসপাতালে সেবা দিতে আসা অনেক চিকিৎসকই নিয়ম অনুযায়ি কর্তব্য না করায় তাদেরকে জনগনের কাছে হেনস্থা হতে হয়। তাছাড়া ক্ষমতাসীন দলের নেতারা অনেকে ক্ষেত্রে বিশেষ মারমুখি হয়।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ কুদরত-ই-খুদা বলেন, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক সংকট রয়েছে। হাসপাতালে ৫৮ জনের পরিবর্তে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৩২ জন। এছাড়া রয়েছে নার্স সংকট। হাসপাতালে ১৬৫ জন স্টাফ নার্স থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ১৩৫ জন। আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখেছি। তবে শীঘ্রেই ১০৬ জন স্টাফ নার্স যোগদান করার কথা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎস্যকরা নিয়মিত ভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা আগের চেয়ে এখন অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা রোগীদের সর্বচ্চো চিকিৎসা সেবা দেয়ার চেষ্টা অব্যহত রেখেছি। আগের চেয়ে রোগীও এখন অনেক বেশী। মানুষ এখান থেকে তাদেও কাঙ্খিত সেবা পচ্ছেন। যদি কোন ত্রুটি থেকে থাকে তাহলে আমরা দ্রুত সেটা সমাধানের চেষ্টা কররো বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/ টি আই