সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের অকেজো লিফটের নিচে পড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলী মন্ডলের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে লিফটম্যান ও সিকিউরিটি না থাকা, অকেজো লিফটের সামনে নিরাপত্তামূলক কোন চিহৃ না থাকাসহ সামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু ত্রুটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৯ অক্টোবর মডিকেল কলেজ হাসপাতালের অকেজো লিফটের নিচ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলী মন্ডলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার হওয়ার পর ১০ অক্টোবর পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সামেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: অজয় কুমার সাহাকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করেন পরিচালক ডা: শেখ কুদরত ই খুদা। কমিটিকে পরবর্তী ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সদস্য সচিব সামেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডাঃ আহম্মেদ আল মারুফ ও সদস্য ডাঃ মানষ কুমার মন্ডল, ডাঃ সাউদ বিন খায়রুল আনম এবং ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টার মুরাদ হোসেন।
তদন্ত কমিটির সদস্য ডাঃ মানষ কুমার মন্ডল বলেন, গত ১৩ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। তদন্তে সার্বক্ষনিক লিফটম্যান ও সিকিউরিটি না থাকা, অকেজো লিফটের সামনে নিরাপত্তমূলক বিশেষ কোন চিহৃ না থাকা, ঠিকাদার কৃর্তক আনুষ্ঠানিকভাবে লিফপ হস্তান্তর না করা, অকেজো লিফট মেরামতের ব্যবস্থা না করা সহ বেশ কিছু ত্রটি পরিলক্ষিত হয়েছে।
এদিকে লিফটের নিচে থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সামেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. কুদরত ই খুদা, মেডিকেল টেকনেশিয়ান আব্দুল হালিম, ওয়ার্ড মাস্টার মুরাদ হোসেন ও লিফটম্যান আরিফ হোসেনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়েরের পর আব্দুল হালিম ও জমাদার আমিনুর রহমানসহ তিনজনকে বদলি করা হয়েছে। অপরদিকে আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন পরিচালক ডা. কুদরত ই খুদা।
প্রসঙ্গতঃ গত ৪ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে ওষুধ নিতে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে নিখোঁজ হন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈচনা গ্রামের মৃত এজাহার আলী মন্ডলের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলী মন্ডল। এব্যাপারে ৫ অক্টোবর সদর থানায় তাকে নিখোঁজ উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি করে তার পরিবারের সদস্যরা। এরপর ৯ অক্টোবর সামেক হামপাতালের অকেজো লিফটের নিচে থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলী মন্ডলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় নিহতের ছেলে আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে সামেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. কুদরত ই খুদা, হাসপাাতলের মেডিকেল টেকনেশিয়ান আব্দুল হালিম, ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টার মুরাদ হোসেন ও লিফটম্যান আরিফ হোসেনকে আসামি করে ১১ অক্টোবর মঙ্গলবার সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিররুদ্ধে অভিযোগ করে মামলার বাদী আব্দুল্লাহ বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা ও হাসপাতালের সাধারণ কর্মচারী ও কিছু দালালের কারণে আমার বাবার এমন মৃত্যু হয়েছে। একারণে আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: শেখ কুদরত ই খুদা বলেন, ঘটনার পর মেডিকেলের সহকারী পরিচালক ডা: অজয় কুমার সাহার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তাদের তদন্ত কাজ শেষ করেছেন। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই