একটি ফোন কলই ৫৬ বছর ৮ মাসের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছে। ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা রাজ্যের পাথানামথিট্টা থানা থেকে থমাস নামের এক ব্যক্তিকে ফোন করে জানানো হয় তার বড় ভাই থমাস চেরিয়ানের মরদেহ পাওয়া গেছে।
চেরিয়ান ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন ক্রাফটম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৬৮ সালে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিমানে ১০২ জন যাত্রীর সঙ্গে ভ্রমণ করেন। কিন্তু বিমানটি খারাপ আবহাওয়ার মাঝে পড়ে হিমালয় অঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়।
ওই সময়ে বিমানটি রোটং অঞ্চল থেকে উড়ে যাওয়ার পরই রাডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। অঞ্চলটি ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হিমাচল প্রদেশের সঙ্গে সংযুক্ত এবং ভারত শাসিত কাশ্মীর প্রশাসন দ্বারা পরিচালিত।
এরপর বিমানটি খুঁজে না পাওয়ার কারণে কয়েক বছর ধরে এইএএফ এএন-১২ এয়ারক্রাফটটিকে খুঁজে না পাওয়ার তালিকায় যুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে পাহাড়ি একদল লোক ওই বিমানের একজন যাত্রীর মরদেহ খুঁজে পায়। এরপর সেনাবাহিনী অনুসন্ধান চালিয়ে ২০১৯ পর্যন্ত আরও আটটি মরদেহ উদ্ধার করে। এছাড়া ওই অঞ্চলের পাহাড় থেকে বিমানটির ধ্বংসাবশেষও উদ্ধার করে।
নতুন করে এ ঘটনাটি আবারও খবরের শিরোনাম হয় যখন কয়েকদিন আগে ১৯৬৮ সালে দুর্ঘটনার শিকার ওই বিমানের চারজন সেনা সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। যাদের মধ্যে চেরিয়ারে মরদেহ ছিল।
৫৬ বছর আগে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধান পাওয়ার খবর শোনার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়েছিল থমাসের।
চেরিয়ার ছিলেন তারা বাবা মায়ের পাঁচ সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। যখন যে নিখোঁজ হয় তখন তার বয়স ছিল ২২ বছর। চাকরিতে যোগদানের পর ওই সময়ে তিনি প্রথমবার হিমাচল প্রদেশের ফিল্ড ওয়ার্কের জন্য বিমানে ওঠেন।
২০০৩ সালে যখন প্রথম কারো মরদেহ পাওয়া যায় তখন চেরিয়ান নিখোঁজ হওয়ার তালিকা থেকে তাকে মৃতদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এরপর একে একে আরও ১৩টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
হিমালয় প্রদেশের কঠিন আবহাওয়া পরিস্থিতি এবং বরফের কারণে অভিযান কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত চেরিয়ানসহ আরও তিনজনের মরদেহ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬ হাজার ফুট উপর থেকে উদ্ধার করা হয়।
সূত্র: বিবিসি
খুলনা গেজেট/এনএম