খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট
লাশ নিয়ে লুকচুরি

সান্তানের লাশ ফিরে পেতে বন কর্মকর্তার পা ধরে মায়ের আহাজারি

ওয়াসিম আরমান, মোংলা

মায়ের কান্দন যাবত জীবন, ভাইবোনের কান্দন কয়েকদিনেরগো, ঘরের পরিবারের কান্দন বেশি দিন আর থাকেনা। জনম দুঃখিনী আমার কপাল পোড়া মা”
সন্তান হারানোর শোকে পাগল প্রায় সুন্দরবনে নিখোঁজ হিলটন নাথের মা যুথিকা নাথ। যুথিকা নাথের বুকফাটা আর্তনাদ আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে উপকূলীয় এলাকা মোংলা উপজেলার চিলা গ্রাম।

৭ এপ্রিল শুক্রবার আপন বড় ভাই সগর নাথের সাথে সুন্দরবনে মাছ ধরতে যায় হিলটন নাথ। অবৈধ ভাবে বনে মাছ ধরার অপরাধে ঐ দিন রাতেই সাগরসহ আরও দুজনকে বনরক্ষীরা আটক করলেও সেই থেকে নিখোঁজ রয়েছে যুথিকা নাথের ছোট ছেলে হিলটন নাথ। শত খোজা খুজিঁ করেও মিলছে না হিলটনের সন্ধান। জীবত অথবা মৃত সন্তানকে ফিরে পেতে নদী এবং বন ঘুরে বেরাচ্ছেন মা যুথিকা।

হিলটনের পরিবার এবং এলাকাবাসি বলেন ওইদিন রাতে বনরক্ষিদের মারধর সইতে না পেরে জীবন বাচাঁতে নদীতে ঝাফিয়ে পরে হিলটন। ঘটনা ছয় দিন পার হয়েগেলও এখনও মিলছেনা হিলটনের সন্ধান।

এদিকে ৭ এপ্রিল সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে নিখোঁজ হিলটন ব্যপারে এলাকাবাসি ও তার পরিবারে মাঝে তৈরি হয় নতুন চাঞ্চল্যতা। ছড়িয়ে পরা সেই ভিডিওতে দেখা যায় সুন্দরবনের জোংড়া ফরেস্ট স্টেশনের ঘাটে আটকে রয়েছে একটি লাশ,যার পরনে রয়েছে কালো প্যান্ট, সেখানে কাজে কর্মরত কিছু শ্রমিক সেই লাশের ভিডিও তাদের মোবাইলে ধারন করে এবং তার বলতে থাকে এটা সম্ভবত সেই নিখোঁজ চিলা এলাকার হিলটনের লাশ। সেই ভিডিও সুত্রধরে হিলটনের পরিবার ও এলাকাবাসি দাকোপ থানা নৌ পুলিশ কে সাথে নিয়ে ঘটনা স্থলে পৌছালে তারা সেখানে কোন লাশ খুজে পায়নি। লাশের সম্পর্কে তারা ফরেস্ট কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তারা তা অস্বীকার করেন।

উপস্থিত এলাকা বাসি এবং হিলটনের মা লাশটি ফিরে পেতে এবং সন্ধান জানতে ফরেস্টের কর্মকর্তার কাছে আকুতি মিনতি করলেও তারা তা অস্বীকার করেন। এক পর্যায়ে হিলটনের মা যুথিকা নাথ সন্তানের লাশটি ফিরে পেতে সকলের সামনে বন কর্মকর্তার পা জড়িয়ে ধরে সন্তানের লাশটি ভিক্ষা চাইলেও কোন উত্তর দেননি ওই কর্মকর্তা। সন্তানের লাশ ফিরে পেতে বন কর্মকর্তার পাধরে মা যুথিকা নাথের সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে সাধারণ মানুষ তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানান।

ফরেস্ট ঘাটে আটকে থাকা লাশটি হিলটনের কিনা জানতে চাইলে হিলটনের চাচা স্বপন নাথ বলেন ওটাই আমার ভাইপোর লাশ, এবং তার পরনে কালো প্যান্ট ছিল। আর যদি আমার ভাইপোর লাশ না হবে তা হলে কার লাশ, আর এই লাশ গায়েব হলো কেনো। আমরা জানতে চাই।

চিলা ইউপি সদস্য ইশারাত ফকির খুলনা গেজটকে জানান আমাদের এখানকার কিছু লোক ঐ দিন সেখানে শ্রমিকের কাজ করতে ছিল তারা লাশটি দেখতে পেয়ে ভিডিও করে এবং বন কর্মকতাদের জানায়, পরে তাদের কাছথেকে মোবাইল ফোন রেখে দেয় ফরেস্টের লোকজন, কিন্তু তার আগেই তারা ভিডিও আমাদের কাছে পৌছে দেয়। ওটাই আমার এলার বাসিন্দা হিলটনের লাশঁ। গ্রাম বাসি লাশঁটি আনতে গেলে তারা দেয়নি বরং তারা লাশটি গায়েব করে ফেলেছে। কারন তাদের মারধরের স্বীকার হয়ে হিলটন নদীতে পরে মারা গেছে।

এব্যাপরে জোংড়া ফরেস্টের ওসি আলমগির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ওই লাশ সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। ভিডিওতে দেখা ফরেস্ট ঘাটে লাশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন হ্যাঁ ঘাট আমার আমিও একটি ভিডিও দেখেছি তবে আমি সরাসরি কিছু দেখিনি, আমাকে কেউ এ সম্পর্কে জানায় নি। জোয়ার ভাটার নদীতে অনেক কিছুই ভেসে আসে এবং চলে যায় আমি কিছুই দেখিনি এবং জানিনা।

তবে ঐ দিন ফরেস্ট ঘাটে কাজ করা তাজু শেখ নামের এক শ্রমিক অন্য একটি ভিডিও লাইভে এসে বলেন লাশটি আমরা ভাসতে দেখে স্থাীয় ফরেস্ট অফিসে জানালে তরা লাশটি তাদের নৌকার সাথে বেধে মাঝ নদীতে নিয়ে যায়। এরপর আমরা আর কিছুই জানিনা।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!