খুলনা, বাংলাদেশ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৯ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন
  সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় কিশোরগঞ্জের এসপি ও ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা প্রত্যাহার এবং কিশোরগঞ্জে দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও এসবির এক কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত
  ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কায় নিহত ৫, গুরুতর আহত আরও ১০

সাদা চিনি, লাল চিনি, না গুড় কোনটা খাবেন?

লাইফ স্টাইল ডেস্ক

চিনি হলো একটি প্রাকৃতিক মিষ্টি। অনাদিকাল থেকে খাদ্যের আকর্ষণীয় উপাদান এটি। তবে স্বাস্থ্যের জন্য সাদা চিনি, লাল চিনি, না গুড়—কোনটা তুলনামূলক ভালো?

বাদামি ও সাদা চিনির ক্যালরি খুব কাছাকাছি। যেমন এক টেবিল চামচ বাদামি চিনিতে ১৫ ক্যালরি আর সমপরিমাণ সাদা চিনিতে ১৬.৩ ক্যালরি থাকে। বাদামি চিনিতে ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, কপার, ফসফরাস ও পটাশিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট পাওয়া যায়।

কিন্তু বেশি প্রক্রিয়াকরণের কারণে সাদা চিনিতে ক্যালরি ছাড়া অন্য কোনো খনিজ উপাদান নেই এবং সালফার থাকায় মানবদেহের জন্য ঝুঁকিও থাকে। তবে বাদামি চিনিতে যেসব খনিজ উপাদান থাকে, তার পরিমাণ এতটাই ন্যূনতম যে স্বাস্থ্যের জন্য খুব বেশি সুবিধা দেয় না।

লাল চিনি খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা-

▶ প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম থাকার কারণে লাল চিনি খেলে হাড় শক্তপোক্ত হয়। সেই সঙ্গে দাঁতের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে। ক্যাভিটি এবং ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কাও দূর হয়।

▶ এটি অ্যাটিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করে এবং শরীরের ভেতরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে দেয়।

▶ লিভার সুস্থ রাখে।

▶ জন্ডিসের প্রকোপ কমায়।

▶ কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করে।

▶ লাল চিনিতে থাকা অ্যালকেলাইন প্রপাটিজ গ্যাস-অম্বলের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

▶ শরীরের মিনারেল তথা খনিজ পদার্থের চাহিদা পূরণ করে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখে, যা স্ট্রোক প্রতিরোধ করে।

▶ শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে।

লাল চিনি রিফাইন বা পরিশোধন করলে ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন, এনজাইম এবং অন্যান্য উপকারী পুষ্টি উপাদান দূর হয়ে যায়।

তবে গুড় যেকোনো চিনির তুলনায় স্বাস্থ্যকর। এটি আয়রন, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, ম্যাংগানিজ, ম্যাগনেশিয়ামের মতো অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ। গুড়ের গ্লাইসেমিক সূচক কম হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে ও ওজন হ্রাসে সহায়তা করে। এ ছাড়া গুড় পলিফেনল ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের পাওয়ার হাউস। এতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য আছে, যা শরীরে রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গুড় ননহিম আয়রনের (উদ্ভিজ্জ খাদ্য থেকে প্রাপ্ত) একটি চমৎকার উৎস, যা নারীদের ঋতুস্রাবের সময় এবং মাসিকের ক্রাম্পের ব্যথায় বেশ উপকারী।

পরিশোধিত বা সাদা চিনি সুক্রোজের সহজতম রূপ, যা রক্তে সহজেই শোষিত হয় এবং তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। এতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ বাড়তে পারে, যা ডায়াবেটিক রোগীর জন্য ভালো নয়। অতিরিক্ত সেবনে ওজন বাড়তে পারে। অপর দিকে গুড় ধীরে ধীরে শরীরে শক্তি জোগায়, যা দুর্বলতা, দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি, সোডিয়াম, পটাশিয়ামের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা প্রতিদিন অল্প পরিমাণে গুড় খেতে পারেন।

পুষ্টিগত দিক থেকে বাদামি চিনি ও গুড়ের পার্থক্য দেখা যাক। ১০০ গ্রাম বাদামি চিনিতে ক্যালরি থাকে ৩৮০ এবং গুড়ে ২৯০। আবার ১০০ গ্রাম গুড়ে চিনির পরিমাণ ৭৪.৭ গ্রাম এবং বাদামি বা লাল চিনিতে ৯৭ গ্রাম চিনি থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম গুড়ে ক্যালসিয়াম থাকে ২০৫ মিলিগ্রাম এবং বাদামি চিনিতে থাকে ৮৩ মিলিগ্রাম। ১০০ গ্রাম গুড়ে আয়রন থাকে ৪.৭ মিলিগ্রাম, যা বাদামি চিনিতে থাকে ০.৭১ মিলিগ্রাম। ১০০ গ্রাম গুড়ে পটাশিয়াম থাকে ১ হাজার ৪৬৪ মিলিগ্রাম এবং বাদামি চিনিতে থাকে ১ হাজার ১০০ মিলিগ্রাম।

আসলে কোনো চিনিই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। চিনি ব্যবহার সীমিত করতে হবে, যা মোট ক্যালরির ৫ থেকে ১০ শতাংশ রাখলে খুব ভালো। গুড়ের ক্ষেত্রেও পরিমাণের দিকে নজর রাখতে হবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!