সাতক্ষীরার ভোমরা ইমিগ্রেশন দিয়ে এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে যাত্রী পারাপার। তবে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দুই সপ্তাহ সীমান্ত বন্ধ ঘোষণার পরে বাড়ানো হয়েছে বিজিবি’র টহল। অবৈধ যাতায়াত বন্ধে ব্যাপক উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন বিজিবি’র কর্মকর্তারা।
সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আল মাহমুদ জানান, সীমান্তে বিজিবি’র পেট্রলিং বাড়ানো হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে লোকবল। অবৈধ যাতায়াত বন্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
সীমান্তে কর্মরত বিজিবি’র কর্মকর্তারা জানান, সাতক্ষীরা সীমান্তের অনেক স্থানে কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় অবৈধভাবে যারা ভারতে-বাংলাদেশে যাতায়াত করেন তাদের নিয়ে কিছুটা সমস্যা হয়। আমরা সর্বদা চেষ্টা করি অবৈধভাবে যাতে কেউ পারাপার না হতে পারে। বিশেষ করে ইছামতিসহ সীমান্ত কিছু নদীর কারণে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবিকে বেশ বেগ পেতে হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সীমান্ত এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বহু লোকজন যাতায়াত করে থাকেন। বিশেষ করে যারা কাজের জন্য ভারতে যান, তাদের অধিকাংশ অবৈধভাবে যান। সাতক্ষীরা সীমান্তে কমপক্ষে ১৭ টি কথিত ঘাট রয়েছে। রয়েছে কথিত ঘাট মালিক। জনপ্রতি সাত হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকায় তাদেরকে কোলকাতায় পৌছে দেওয়া হয়। দু’তিন দিনের জন্য টাকা নেওয়া হয় ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। যারা কাজ করেন, তাদের বছরব্যাপী থাকতে হয় ভারতে। অন্যদিকে ভিসাতে ৩ মাসের মধ্যে ফেরত আসতে হয় বলে তারা অবৈধভাবে যাতায়াতটাকে শ্রেয় ভাবেন।
এদিকে করোনা ঠেকাতে গত বছরের এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে সাতক্ষীরার ভোমরা ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট। এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ যাত্রী প্রতিদিন ভোমরা ইমিগ্রেশন দিয়ে যাতায়াত করতেন। চিকিৎসা, ব্যবসা, কেনা-কাটা ও পর্যটনের টানে এসব ব্যক্তিরা ভারতে যেতেন। সীমিত সংখ্যক ভারতীয় ব্যবসার জন্য অথবা আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে আসতেন। এক বছরেরও বেশি সময় ভোমরা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় সীমাহীন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে সাতক্ষীরা অঞ্চলের নাগরিকদের। বিশেষ করে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া ব্যক্তিদের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুন। ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে যেতে না পেরে বাধ্য হয়ে তাদের ভারতে যেতে হয়েছে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে।
এ প্রসঙ্গে ভোমরা ইমিগ্রেশন পুলিশ অফিসার বিশ্বজিৎ সরকার জানান, সরকারি আদেশে গতবছরের এপ্রিল মাস থেকে বন্ধ রয়েছে সাতক্ষীরার ভোমরা ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট। তবে পণ্যবাহী ট্রাকের ভারতীয় চালকগণের যাতায়াত রয়েছে। তবে তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হয় বলে জানান এই কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি