সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খইতলা সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে কুশখালি পূর্বপাড়া গ্রামের মক্তব মোড়ের হাসানুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সদর থানার উপ-পরিদর্শক সেকেন্দার আলী বাদী হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) রাতে এ মামলা দায়ের করেন।নিহত হাসানুর রহমান (২৭) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালি পূর্বপাড়া গ্রামের মক্তব মোড় এলাকার হায়দার আলীর ছেলে।
এদিকে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে অনুষ্ঠিত এক পতাকা বৈঠকে বিএসএফ এর পক্ষ থেকে সীমান্তে গুলির কথা অস্বীকার করা হয়। রোববার বিকালে সাড়ে তিনটায় সাতক্ষীরা খৈইতলা সীমান্তের কাছে ভারতের কৈজুড়ি বিএসএফ ক্যাম্পের শূন্য রেখা বরাবর এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএসএফ’র পক্ষে ১৫৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমানডেন্ট মনিশ নেগি ও সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আল মাহমুদ স্ব স্ব সীমান্ত রক্ষী বাজিৎহনীর পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন।
অপরদিকে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে নিহত হাসানুরের এক বন্ধু জানান, প্রতিবেশি শাহজাহান আলীর ছেলে আরিফুল ও মিত্তাব মোল্লার ছেলে আকি শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাসানুরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে কালিয়ানি ছয়ঘরিয়া এলাকার বেড়িবাঁধে তাদের সঙ্গে আরো তিনজন যোগ দেয়। একসাথে তারা ভারত থেকে মাদক নিয়ে ফেরার সময় ভোর সোয়া তিনটার দিকে দুবলী বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এতে হাসানুরের পিঠে গুলি লাগে। পেট দিয়ে ওই গুলি বের হয়ে যায়। তার সঙ্গে থাকা অন্য সহযোগিরা খৈতলা থেকে তাকে তুলে নিয়ে স্বজনদের মাধ্যমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। পরে সেখান থেকে খুলনায় নেয়ার পথে সে মারা যায়।
বিজিবি, বৈকারী বিওপি’র নায়েক সুবেদার আবু তাহের জানান, রোববার বিকাল সাড়ে তিনটায় বিএসএফ ও বিজিবি’র ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে কৈজুড়ি বিএসএফ ক্যাম্পের শূণ্য রেখা বরাবর একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএসএফ এর পক্ষে ১৫৩ বিএসএফ কমানডেন্ট মনিশ নেগি ও সাতক্ষীরা বিজিবি’র ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আল মাহমুদ প্রতিনিধিত্ব করেন। বৈঠকে বিএসএফ এর পক্ষ থেকে গুলির কথা অস্বীকার করা হয়। তবে হাসানুরের পিঠে লাগা গুলি পেট দিয়ে যেভাবে বড় গর্ত করে বের হয়ে গেছে তা বিএসএফ এর ব্যবহৃত এসএলআর এর গুলি বলে প্রতীয়মান হয় বলে জানান, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজিবি কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান জানান, নিহত হাসানুরের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করতে অনীহা প্রকাশ করায় সদর থানার উপপরিদর্শক সেকেন্দার আলী বাদী হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই