খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল নিলামে অবিক্রিত মোস্তাফিজুর রহমান, ভিত্তিমূল্য ছিলো ২ কোটি রুপি
  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

সাতক্ষীরা মেডিকেল ও নলতা ম্যাটস এর দুর্নী‌তি তদন্তে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাড়ে ৬ কোটি টাকার প্যাক্স মেশিন ক্রয়ে দুর্নী‌তি এবং কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) ও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) এর আসবাবপত্র ও খেলার সামগ্রীসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ক্রয়ে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ অতিরিক্ত অপচয়ের অভিযোগে দায়েরকৃত দুদকের মামলার তদন্তকার্য অব্যাহত আছে।

দুদক’র প্রধান কার্যালয় থেকে দু’টি টিম সাতক্ষীরায় এসে মঙ্গলবার ও বুধবার (১৬ ও ১৭ আগষ্ট) তদন্তকার্য পরিচালনা করেছেন। দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিলের লক্ষে দ্রুতগতিতে তদন্তকাজ পরিচালিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের পরীক্ষা নীরিক্ষার সামগ্রীক তথ্য বছরের পর বছর জমারাখার জন্য (তথ্য ভান্ডার) প্যাক্স মেশিন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন সামেক হাসপাতালের তৎকালিন তত্ত¡াবধায়ক ডাঃ শাহাজান আলী। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দরপত্র আহবানপূর্বক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিযুক্ত করে মেশিন সরবরাহের আগেই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিল পরিশোধের অভিযোগে উঠে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর প্রাথমিক তদন্তে নেমে বিল পরিশোধের সমুদয় কাগজপত্র জব্দ করে দুদক। অনিয়মের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হওয়ায় ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর দুদক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৯। এই মামলার বর্তমান তদন্তকারি কর্মকর্তা এডি রাকিবুল হায়াত মঙ্গলবার সাতক্ষীরায় আসেন। তিনি বুধবার পর্যন্ত কয়েক দফায় সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান এবং ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টদের লিখিত বক্তব্য গ্রহণপূর্বক তদন্তকার্য সম্পন্ন করেন।

তদন্তকারি কর্মকর্তা এডি রাকিবুল হায়াত জানান, স্বাস্থ্য খাতের আলোচিত এই মামলার তদন্তকার্য দ্রæতগতিতে চলছে। ক্রয়কৃত পণ্য প্রতিষ্ঠান না পেয়ে কীভাবে সরকারি অর্থ বিল পরিশোধ করলেন তার সঠিক জবাব এখানো মেলেনি। ফলে তদন্তকার্য শেষ হলেই অচিরেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।

এদিকে নির্ভরযোগ্য অপর একটি সূত্র জানায়, কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) ও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) এর আসবাবপত্র এবং খেলার সামগ্রী ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে দায়েরকৃত দুটি মামলার তদন্ত করে দুদক। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক’র এডি শহিদুর রহমান সরেজমিনে মঙ্গলবার ও বুধবার (১৬ ও ১৭ আগষ্ট) এই তদন্ত কার্য সম্পন্ন করেন।

সূত্রমতে, ২০২০ সালে নলতা আইএইচটি’র শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য বিপুল পরিমাণ খেলার সামগ্রী ক্রয় করা হয়। তৎকালিন এই প্রতিষ্ঠানের চলতি দায়িত্বে থাকা সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ তৌহিদুর রহমানসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরষ্পর যোগসাজসে বাজার মূল্যের চেয়ে কয়েকগুন বেশি দামে খেলার সামগ্রী ক্রয় করে অনিয়মের আশ্রয় নেন। বিষয়টি জানার পর তদন্তে মাঠে নামে দুদক। দুদক’র প্রাথমিক তদন্তে খেলার সামগ্রী ক্রয়ে বাজার মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে ক্রয় করে সরকারের ২০ লাখ ৬১ হাজার ৩৫০ টাকা ব্যয় দেখান হয়। এঘটনায় দুদক বাদী হয়ে ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রæয়ারি ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২)ধারাসহ দন্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ১০৯ ধারায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ কয়েকজনের নামে মামলা দায়ের করেন।

এছাড়াও বাজার মূল্যের চেয়ে কয়েকগুন বেশিদামে ম্যাটস এর আসবাবপত্র ক্রয়ের অভিযোগ দুদকের প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়। তদন্তে এই কেনাকাটায় সরকারের অতিরিক্ত ৯৮ লাখ ২হাজার ৮১০ টাকা ব্যয় দেখিয়ে নিজেরা হাতিয়ে নেয় বলে প্রমাণ পায় দুদক। ফলে দুদক বাদী হয়ে ২০২০ সালের ৩ জুন দন্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ২১৮ ও ১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় পৃথক একটি মামলা দায়ের করেন।

আলোচিত এই দু,টি মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা দুদক’র এডি শহিদুর রহমান মঙ্গলবার সাতক্ষীরায় আসেন। তিনি মঙ্গলবার ও বুধবার অনিয়মের এসব বিষয় নিয়ে তদন্তকার্য পরিচালনা করেন। একই সাথে এই তদন্তকার্য পরিচালনায় সহয়তার জন্য ডাঃ মোঃ মেহেদী হাসান, ডাঃ শেখ আকছেদুর রহমান, ডাঃ মোঃ আব্দুল লতিফ, ডাঃ শেখ তৈয়েবুর রহমান ও স্টোরকিপার মামুনুর রশিদ এর সাথে কথা বলেন তদন্ত কর্মকর্তা। এই দুটি মামলার তদন্তকালে ১৬ ও ১৭ আগস্ট তাদের উপস্থিত থাকতে গত ৮ আগস্ট একটি পত্র দেয় দুদক।

দুদক’র এডি রাকিবুল হায়াত তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে এই মূহুর্ত্বে বিস্তারিত জানানো সম্ভব নয় বলে বলে জানান।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!