খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি মারা গেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শোক প্রকাশ
  চট্টগ্রামে বাসের ধাক্কায় স্কুল শিক্ষার্থী ভাই-বোনসহ ৩ জনের মৃত্যু
  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষক দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা পাবেন : আপিল বিভাগ; বেতন হবে ১০ম গ্রেডে

সাতক্ষীরা ট্রমা সেন্টারে হামলা : চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ ১০ জনের নামে পাল্টাপাল্টি মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

তথ্য সংগ্রহে সাতক্ষীরা ট্রমা সেন্টারে গিয়ে মারপিটের শিকার হয়েছেন অভিযোগে সামেক হাসপাতালের অর্থপেডিক্স সার্জন ডা. মো. হাফিজুল্লাহসহ ৮ জনের নামে মামলার পর হামলা ও চাঁদা দাবির অভিযোগে দুই সাংবাদিকের নামে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। শনিবার (৮ মার্চ) রাত সাড়ে দশটার দিকে সাতক্ষীরা শহরের ট্রমা সেন্টারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনির দায়ের করা মামলার প্রধান আসামী ডা. মো. হাফিজুল্লাহসহ তার ক্লিনিক সংশ্লিষ্ট ৮ জন। সোমবার (১০ মার্চ) রাতে সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনির দেওয়া অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

অভিযুক্ত ডাক্তার মো. হাফিজুল্লাহ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক সার্জারি কনসালটেন্ট এবং সাতক্ষীরা ট্রমা সেন্টারের পরিচালক।

অপরদিকে সাংবাদিক মনিসহ ২ জনের বিরুদ্ধে বুধবার (১২ মার্চ) সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদী সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. মো. হাফিজ উল্লাহ। আসামিরা হলেন, মো. মনিরুল ইসলাম মনি (৪৮) ও গাজী ফরহাদ হোসেন (৩২)।

মনিরুল ইসলাম মনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তারাবির নামাজ শেষে সহকর্মীদের সঙ্গে ট্রমা সেন্টারে একটি রোগীকে দেখতে যাই। রোগী দেখে বাইরে বের হয়ে দেখি এক বৃদ্ধ মহিলা ভ্যানের ওপর শুয়ে কাতরাচ্ছে। এ সময় আমি তাদের কাছে জানতে চাই কী হয়েছে? রোগীর স্বজনরা জানায়, তারা বৃহস্পতিবার থেকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল। কিন্তু তিন দিনেও ট্রিটমেন্ট না পেয়ে হাসপাতালের লোকজনের পরামর্শে ট্রমা সেন্টার এসেছেন।

তিনি বলেন, তারা আমার কাছে সহযোগিতা চেয়ে আকুতি মিনতি করে। এক পর্যায়ে আমি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডাক্তার প্রবীর কুমারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলি। এ সময় রোগীর চিকিৎসা না পাওয়াসহ হাসপাতালের লোকজনের পরামর্শে রোগী বাইরে পাঠানোর বিষয়টি তাকে অবগত করি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনিরকে মারপিট করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এদিকে ডা. মো. হাফিজ উল্লাহ তার মামলার এজাহারে অভিযোগ করেন, সাংবাদিক পরিচয়দানকারী সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা মো. মনিরুল ইসলাম মনি ও গাজী ফরহাদ হোসেন ভন্ড প্রতারক ব্যক্তি। তারা আমার সাতক্ষীরা শহরস্ত নারিকেলতলা মোড় ‘সাতক্ষীরা ট্রমা এন্ড অর্থোপেডিক্স কেয়ার সেন্টারে গত ৮মার্চ রাত্র অনুমান ১০টার দিকে হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে আনার অভিযোগ তুলে আমার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। এসময় সাতক্ষীরা মেডিকেল থেকে জোরপূর্বক উক্ত রোগীর সাথে মিথ্যা স্বীকারোক্তি নেওয়ার জন্য ‘এই মর্মে কথা বলে যে, আমার প্রতিষ্ঠানের লোক তাদের সাতক্ষীরা মেডিকেল থেকে জোরপূর্বক এখানে নিয়ে আসতে বাধ্য করছে’। বিষয়টি আমার প্রতিষ্ঠানের লোকজন বুঝতে পারলে বিবাদীগণ আমার প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সাথে বাকচারিতায় লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে কথা বার্তার এক পর্যায় আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ নানান ভয়ভীতি প্রদান করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে।

ঘটনার এক পর্যায় তারা উত্তেজিত হলে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে পরিবেশ শান্ত করতে এবং পরস্পর বিবাদীরা উত্তেজিত হয়ে ক্লিনিক প্রাঙ্গণে কর্মচারীর সাথে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। আমি ঘটনাটি শুনে যত দ্রুত সম্ভব ক্লিনিক প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলে বিবাদীরাও আমার কোন কথা না শুনে উত্তেজিত হয়ে আমাকে ঠেলে ফেলে দেয়। তারা হুমকি প্রদান করে বলে যে, পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রতি মাসে মাসিক হিসেবে বিবাদীদেরকে না দিলে প্রতিনিয়ত এরূপ হয়রানিমূলক কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং সোস্যাল মিডিয়ায় আমার প্রতিষ্ঠান ও আমার সম্পর্কে মানহানিমূলক ভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আমি নিরুপায় হয়ে অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে আইনি সহায়তা কামনা করেছি।

সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামিনুল হক এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!