বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাতক্ষীরায় রবিবার থেকে মাঝে মধ্যে ঝড়ো হাওয়ার সাথে সাথে হালকা ও মাঝারী ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুটের অধিক উচ্চতায় প্রবাহিত হওয়ায় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস। সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার জরাজীর্ণ প্রায় ৬২ কিলোমিটার বেঁড়িবাধের ৩৫ টি পয়েন্ট ঝুকির মধ্যে রয়েছে।
এদিকে, আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুর এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর ৬-৭ হাত বেড়িবাধ ভেঙে প্রায় ২০০ বিঘা মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়। পরে তা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করা হয়।
আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম জানান সোমবার বেলা ১১ টার দিকে তার ইউনিয়নের গদাইপুর এলাকার আব্দুল মান্নান মাষ্টারের মৎস্যঘের সংলগ্ন এলাকায় সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ -২ এর অধীনে ৭/২ নং পোল্ডারে খোলপেটুয়া নদীর জরাজীর্ণ বেড়িবাধ ভেঙে যায়। এতে প্রায় ২০০ বিঘা মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে যায়। পরে দুপুরের মধ্যে তিনি স্থানীয়দের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে তা সংস্কার করতে সক্ষম হন। তবে, পরবর্তী জোয়ারে কি হবে তা বলা যাচ্ছেনা বলে তিনি জানান।
উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরের দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, রবিবার থেকেই থেমে থেমে হালকা, মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ইতিমধ্যে ভারী বর্ষনের কারনে শতাধিক ঘের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া গাবুরা, নাপিতখালি, জেলেখালি, তিন নম্বর পোল্ডারসহ বিভিন্ন এলাকায় উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। ইতিমধ্যে নদীর পানি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারের সময় বাঁধের কানায় কানায় পানি উঠছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, পাউবো’র দুটি বিভাগের আওতায় মোট ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধরয়েছে। এর মধ্য ৬২ কিঃমিঃ উপকূল রক্ষা বাঁধের মধ্যে ৩৫ পয়েন্ট খুবই জরাজীর্ণ। তবে, ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার অনেক জায়গায় চলমান রয়েছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা ও মাঝারী ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২-১ দিন আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকবে তারপর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়ে তিনি আরো জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ৫৯.৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এসজেড