সাতক্ষীরা শহরের ২৫৩টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর অবশেষে দখলমুক্ত হল প্রাণসায়র খাল পাড়। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে টানা ৭দিন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সাতক্ষীরার শহরের প্রাণসায়র খালের দু’পাড়ে গড়ে উঠা সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
জেলা প্রশাসনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা শহরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত প্রাণসায়ের খালকে দৃষ্টিনন্দন করতে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে খালের দু’পাড়ে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় পর্যায়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়ে শেষ হয় গতকাল (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে। গত সাতদিনের অভিযানে মোট ২৫৩টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রশাসন। এরআগে মুজিববর্ষ উপলক্ষে চলতি বছরের শুরুতেই অভিযান পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু কয়েকদিন অভিযান চলার পর করোনা পরিস্থিতির কারণে তা সাময়িক স্থগিত ছিল।
সুত্রটি আরো জানায়, দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পের পাশাপাশি জলাবদ্ধাতার নিরসনের লক্ষ্যে শহরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত প্রাণসায়ের খালের দুই ধারে গড়ে ওঠা এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। জলাবদ্ধতা থেকে শহরবাসীকে মুক্তি এবং প্রাণসায়র খাল রক্ষায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের সুলতানপুর বড়বাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা ও সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) অফিসের পিছন থেকে এ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়। পৃথক দু’টি বুলডোজার দিয়ে এসব অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কাজ করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রজিৎ কুমার সাহা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী রাশেদ রেজা বাপ্পি।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রজিৎ কুমার সাহা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিছন থেকে শহরের নারিকেলতলা ব্রিজ পর্যন্ত প্রাণসায়ের খালের দু’ধারে রয়েছে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পৌরসভার জায়গা। ইতিপূর্বে প্রাণসায়ের খাল খননের লক্ষ্য কয়েকবার খালের দু’ধারে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। শুধুমাত্র জেলা প্রশাসনের জায়গা জবর দখলকারিদের চিহ্নিত করে দু’টি বুলডোজার দিয়ে এসব অবৈধ স্থাপনা ভাঙ্গার কাজ শুরু করা হয়।
তিনি আরো বলেন, অভিযান পরিচালনাকালে প্রাণসায়র খালের জমি দখল করে গড়ে ওঠা ২৫৩ টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদস্থ কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অভিযানকালে উপস্থিত থেকে সহযোগিতা করেন।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, প্রাণসায়ের খালকে দৃষ্টিনন্দন করতে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় খালের দুই ধার দিয়ে ওয়াক ওয়ে নির্মাণ করা হবে। যাতে প্রাত ও সান্ধ্যকালীন সময়ে মানুষ নির্বিঘ্নে হাটা চলা করতে পারে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে খালের দু’পাড়ে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ তালিকাভূক্ত সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। সাতক্ষীরা থানা মসজিদের পাশে কিছু স্থাপনা আছে-সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে। উচ্ছেদ অভিযানে সহযোগিতা কারার জন্য জেলা প্রশাসক জেলাবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এআইএন