খুলনা, বাংলাদেশ | ২৩ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৮ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  খিলগাঁও থানার ৪ হত্যা মামলায় সাবের হোসেন চৌধুরীর জামিন
  দুর্গাপূজার ছুটি বৃহস্পতিবার একদিন বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি
  খুলনায় মাদক মামলায় ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত

সাতক্ষীরায় করোনা ও উপসর্গে চার জনের মৃত্যু, শনাক্তের হার ৬৪.২০ শতাংশ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মাত্র সাড়ে ৮ ঘন্টার ব্যবধানে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) ও সদর হাসপাতালে চার জনের মৃত্যু হয়েছে।শনিবার (১২ জুন) রাত সাড়ে ৮টা থেকে রোববার (১৩ জুন) ভোর ৫ টার মধ্যে বিভিন্ন সময়ে তাদের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে দুই জন ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন দুইজন ।

মৃত ব্যক্তিরা হলেন, করোনা আক্রান্ত যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাড়ি গ্রামের জনাব আলী সানার ছেলে ইসমাইল হোসেন (৪৫) ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের ভালুকা চাঁদপুর গ্রামের মৃত দলিল উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রহিম (৮৫) এবং উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের ফিংড়ী গ্রামের মৃত নুর আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম (৭০) ও আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের শোভনালী গ্রামের মৃত গফ্ফার আলী গাজীর ছেলে মুক্তার আলী গাজী (৬৫)।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফয়সাল আহমেদ জানান, করোনা আক্রান্ত যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাড়ি গ্রামের ইসমাইল হোসেন গত ১১ জুন দুপুরে সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ জুন রোববার ভোর রাত পৌনে ১টার দিতে তিনি মারা যান।

এদিকে করোনা আক্রান্ত সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুর গ্রামের আব্দুর রহিম গত ৪ জুন বেলা ১১টার দিকে সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ জুন রোববার ভোর রাত ৫টার দিতে তিনি মারা যান।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ফিংড়ী গ্রামের নজরুল ইসলাম জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে গত ১২ জুন রাত ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে সামেক হাসপাতালের ফ্লু কর্ণারে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১২ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

এদিকে একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে আশাশুনির শোভানালী গ্রামের মুক্তার আলী গাজী গত ৬ জুন ভোর রাত ৩ টার ২৫ মিনিরে দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (১৩ জুন) ভোর রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।

এনিয়ে ১৩ জুন পর্যন্ত সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ৫৪ জনের আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে আরো অন্ততঃ ২৫১ জন।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কুদরত-ই-খোদা এসব মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃত ব্যক্তিদের মরদেহ দাফনের জন্য বলা হয়েছে।

এদিকে সাতক্ষীরায় দ্বিতীয় দফায় লকডাউন চলছে। রোববার সকাল থেকে ব্যারিকেড বসিয়ে জনসমাগম ও যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। তবে লকডাউনে খানিকটা ঢিলেঢালাভাব দেখা গেছে। জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। এ ছাড়া খুলনা ও যশোর থেকে সাতক্ষীরায় প্রবেশের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, সাতক্ষীরায় করোনা সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোববার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় ৮১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫২ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। শনাক্তের হার ৬৪ দশমিক ২০ শতাংশ।

সাতক্ষীরায় পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও শয্যা সংকটে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বর্তমানে জেলায় ৬৮৩ জন কোভিড রোগী রয়েছে। তাদের মধ্যে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫০ জন ও সদর হাসপাতালে ৩৫ জন চিকিৎসাধীন। অন্য রোগীরা প্রাতিষ্ঠানিক ও পারিবারিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছে।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত জানান, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোভিড রোগীদের জন্য আটটি আইসোলেশন ও ১৩৫টি শয্যা ছাড়াও আট শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) রয়েছে। এ ছাড়া সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে শয্যা রয়েছে মাত্র ৩৫টি। আরও শয্যা ও জনবল না থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!