সাতক্ষীরায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে অপহরণের ঘটনায় মামলার পর আসামী পক্ষ থানায় পাল্টা অভিযোগ করায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সদরের খানপুর এলাকা। যেকোন মুহূর্তে ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। সংঘর্ষ এড়াতে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন গ্রামবাসী।
মিজানুর রহমানের দাবি তার কিশোরী মেয়ে লিজা (১১) কে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, জান্নাতুল ফেরদৌস লিজাকে একই গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে আজমির হোসেন উত্ত্যক্ত করে আসছিল। গত রবিবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আজমির হোসেন, খলিল, আনারুল, মফিজুল, কবিরসহ অজ্ঞাত কয়েকজন দুটি নাম্বার বিহীন মোটর সাইকেলে মিজানুর রহমানের বাড়ির সামনে এসে পিস্তল ঠেকিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস লিজাকে জিম্মি করে ফেলে। এসময় লিজার চিৎকারে তার মা হালিমা খাতুন, চাচী ফরিদা খাতুনসহ অন্যরা এগিয়ে গেলে তাদেরকে মারপিট করে লিজার গলায় ছুরি ও পিস্তল ঠেকিয়ে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। আর এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করার পর পুলিশ রাতেই অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার এবং রবিউল ইসলামের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে বলে জানা যায়।
অপরদিকে আজমির হোসেনের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, কিশোরী লিজার সাথে আজমিরের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি লিজার পরিবার। আজমির হোসেনকে দেশের বাইরে পাঠানোর চেষ্টা করছিল তার পরিবার। এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আজমির হোসেনের পিতা রবিউল ইসলাম বাদি হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় মিজানুর রহমান, আবু জাফর সাকি, হালিমা খাতুন, মনিরুজ্জামান, আবির হোসেনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় হেফাজতে রাখে। সোমবার তার মেডিকেল পরীক্ষা করার কথা ছিল। কিন্তু বিশেষ কারণে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা যায়নি। আজ মঙ্গলবার তার মেডিকেল পরীক্ষা করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
জেলা বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব সাকিবুর রহমান বাবলা সরেজমিন পরিদর্শন শেষে জানান, কিশোরী বালিকা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। সোমবার বিকাল পর্যন্ত তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা যায়নি। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছে। এ কারণে জেলা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে পুলিশি হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেটা যেকোন মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করেন এলাকাবাসি। এ কারণে এলাকায় পুলিশ মোতায়েনসহ প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ গোলাম কবির জানান, তিনি এখন ছুটিতে আছেন। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য তদন্ত ওসির সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে এ বিষয়ে মুঠোফোনে তদন্ত ওসির সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
খুলনা গেজেট/এনএম