সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় খাবার পানির অন্যতম উৎস বৃষ্টি। কিন্তু অনাবৃষ্টি, দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশ, লবণ পানির প্রভাব ও সুপেয় পানির উৎস না থাকায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলীয় এলাকায় খাবার পানির সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
খাবার পানি সংগ্রহের জন্য স্থানীয়দের পাড়ি দিতে হচ্ছে দীর্ঘপথ। বর্তমানে এই দুর্ভোগ উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ও কৈখালি ইউনিয়নে সর্বাধিক। উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় খাবার পানির সংকট মোকাবেলায় কোন প্রকার সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা ছাড়াই নিজেদের অর্থায়নে এগিয়ে এসেছে যতীন্দ্রনগর মটর ও পরিবহন মালিক সমবায় সমিতি।
সংগঠনটির সভাপতি রাসেল মাহমুদের নেতৃত্বে একদল যুবক প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভ্যানে করে ড্রাম ভর্তি পানি নিয়ে মাইকে প্রচারের মাধ্যমে বিতরণ করছে এ এলাকা থেকে ও এলাকায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পানির সমস্যা নিয়ে কোন পোস্ট দেখলেই সেখানে চলে যাচ্ছে রাসেলের পানি বিতরণকারী টিম।
শ্যামনগরের কৈখালীর ছফুরা খাতুন (৩০) বলেন, কৈখালী ইউনিয়নে পানির হাহাকার চলছে। এই সংকট মোকাবেলায় রাসেলসহ অন্যান্যরা খুব চেষ্টা করছে। পাশাপাশি সরকার উদ্যোগ না নিলে সংকট মোকাবেলা করা অসম্ভব।
মুন্সীগঞ্জের আইটপাড়া গ্রামের মর্জিনা বেগম (৫০) বলেন, আমার জীবনে পানির এত অভাব কখনো দেখিনি। সরকারি কোন উদ্যোগ না থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে রাসেল আমাদের প্রতিদিন পানি দিয়ে যাচ্ছেন। তাতে কিছুটা হলেও মানুষ পানি খেয়ে জীবন বাঁচিয়ে রাখতে পারছে।
মৌখালী গ্রামের আলামিন হোসেন বলেন, রাসেল ভাই প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা যেভাবে আমাদের পানি দিয়ে যাচ্ছে, তা ভুলবার নয়। এভাবে রাসেলের মত যদি সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসেন তাহলের উপকূলের মানুষ আরো উপকৃত হতো।
যতীন্দ্রনগর মটর ও পরিবহন মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি রাসেল মাহমুদ বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় আমাদের উপকূলীয় এলাকায় তীব্র সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এজন্য আমরা প্রতিদিন সুপেয় পানি নিয়ে যাচ্ছি মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। এ কার্যক্রম চলবে চলতে থাকবে।
মুন্সীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল বলেন, উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় তরুণরা যেভাবে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে পানি বিতরণ করছে, তা প্রশংসার দাবিদার। তাদের কার্যক্রম দেখে আমি ব্যক্তিগতভাবে ৬টি ড্রাম দিয়েছি। তিনি এভাবে অন্যদেরকেও এগিয়ে আসার আহবান জানান।
খুুলনা গেজেট/ টি আই