সাতক্ষীরায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাইপো’র নেতৃত্বে চাচা, চাচী ও তিন ভাইকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। রবিবার (২২ নভেম্বর) দুপুর একটার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামের সামছুর রহমানের ছেলে আহাদ আলী (৬৯), তার ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন তোফা (৪৮), মজনুর রহমান (৪৫), মোজাম্মেল হক (৩৫) ও আহাদ আলীর স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৫৫)। প্রথমাক্ত তিনজনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধ আহাদ আলী বলেন, তার ভাই দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামের আব্দুল লতিফের বাড়ি সংলগ্ন ভিটায় তিনি সাড়ে ১২ শতক জমি পান। এ নিয়ে কয়েকবার শালিস হয়েছে। গত শুক্রবার আমিন আব্দুর রাজ্জাক ওই জমি মাপ জরিপ করেন। মাপ জরিপ শেষে উভয়পক্ষ সীমানা মেনে নেন। একপর্যায়ে আব্দুল লতিফ ওই জমিতে তাকে (আহাদ) ঘর করার অনুমতি দেন। সে অনুযায়ি তিনি তার ছেলেদের নিয়ে রবিবার দুপুর ১২টার দিকে চিহ্নিত জায়গায় ঘরের জন্য ভিত কাটতে থাকেন। খবর পেয়ে লতিফের ছেলে রাসেলের নেতৃত্বে রমজান আলীর ছেলে আমির আলী, আদম আলীর ছেলে মঞ্জুরুল, মোমিন আলী, শফিকুলের ছেলে শরিফ হোসেন, উজ্জ্বল ও অহেদ আলীর ছেলে জিয়ারুল ইসলামসহ ১০/১২ জন হাতে রাম দা, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারিরা তাদেরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। এসময় স্ত্রী সেলিনা তাদেরকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে জখম করা হয়। স্থানীয় খবর পেয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়।
প্রত্যক্ষদর্শী বাবলুর রহমান, মনিরুল ইসলাম, আকবর আলী ও আব্দুল মান্নান জানান, ইতিপূর্বে আব্দুল আহাদ ও তার পরিবারের সদস্যদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করায় আব্দুল লতিফ ও তার ছেলেসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। সে কথা মনে রেখে আব্দুল লতিফ শুক্রবারের মাপ জরিপ মেনে নিয়ে বড় ভাইকে ঘর করার অনুমতি দিয়ে। দুপুরে ঘর করার খবর পেয়ে মোবাইল ফোনে ছেলে রাসেলকে নির্দেশনা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে আহাদসহ পরিবারের পাঁচজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ তৈয়বুর রহমান জানান, ভারী জিনিস দিয়ে আঘাতের ফলে বৃদ্ধ আব্দুল আহাদের দু’টি দাঁত ভেঙ্গে গেছে। এ ছাড়া আহাদ, তোফাজ্জেল ও মজনুর মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো জিনিস দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। সেলিনা ও মোফাজ্জেল এর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আব্দুল লতিফের ছেলে রাসেল জানান, তিনি এলাকার বাইরে থাকাকালিন ঘটনা ঘটেছে। হামলার সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. লতিফ বলেন, তিনি কোর্টে ছিলেন। খবর পেয়ে আহতদের দেখতে সদর হাসপাতালে যান। এ ধরণের হামলার নিন্দা জানান তিনি।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, দক্ষিন কামারবায়সা গ্রামে একটি মারামারির খবর পেয়ে উপপরিদর্শক হানিফ ও উফতেখারকে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/কেএম