সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈচনা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়েদ আলী মন্ডল হত্যা কান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করেছেন জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তারা।
সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা জি.এম আবদুল গফুর বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সৈয়েদ আলী মন্ডল গত ৪ অক্টোবর সকাল ১০ টায় তার নিজ বাড়ি থেকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঔষধ নিতে এসে নিখোঁজ হয়েছিলেন। তার আত্মীয় স্বজনরা তার কোন খোঁজ না পেয়ে পরদিন ৫ অক্টোবর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের মাধ্যমে সদর থানায় একটি জিডি করেন। এরপর টানা ৪ দিন ধরে নিঁখোজ থাকার পর গত ৯ অক্টোবর দুপুর দেড়টায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নষ্ট লিফটের নিচ থেকে তার গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে মরদেহ শনাক্ত হওয়ার পর পোষ্টমটেম ও গার্ড অফ অনার শেষে মরদেহ দাফন করা হয়।
তিনি আরো বলেন, পরে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা গত ১০ অক্টোবর দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য সেখানে যাই। সেখানে যাওয়ার পর হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ কুদরত ই-খুদা জানান, হাসপাতালের ৪টা লিফটের মধ্যে ৩টা লিফটই গত ৩/৪ মাস যাবত নষ্ট। মাত্র একটা লিফট সচল রয়েছে। যে বন্ধ লিফটির নিচে তার মরদেহ পাওয়া গেছে ওই লিফটের বন্ধ দরজার সামনে সোফা দিয়ে আটকানো ছিল। তাহলে নষ্ট লিফটের ভিতর তিনি কিভাবে ঢুকলেন এবং কেন ঢুকলেন এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি সেখানে উপস্থিত টেকনিয়াশান, কেবিন মাষ্টার ও লিফট ম্যান। তারা বার বার বলতে থাকেন দরজার মুখে সোফা দিয়ে আটকানো ছিলো। এরপর আমরা বলি যে একজন ৮৫ বছরের অসুস্থ বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে ওই সোফা সরিয়ে নষ্ট লিফটে গিয়ে পড়ে যাওয়া আমাদের কাছে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের ধারনা এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
তিনি আরও জানান, গত ১১ অক্টোবর সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সামনে হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিচারের দাবীতে মানব বন্ধনসহ নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছেলে সদর থানায় একটি এজাহারও জমা দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে সাতক্ষীরার মুক্তিযোদ্ধারা এই হত্যা কান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদানের জন্য পুলিশ প্রশাসনসহ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন মশু, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএম আব্দুর রাজ্জাক, বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিক আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক গাজী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাজেদ, শেখ তৈয়েবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মোস্তফা নুরুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ আলীসহ ১৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা।