সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার মহিষাডাঙ্গা গ্রামে একটি মারামারি মামলায় ৬ মাসের কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামী একই গ্রামের লহ্মীকান্ত গাইনের ছেলে গৌতম গাইন এবং এক মাসের সাজাপ্রাপ্ত হন লহ্মীকান্ত গাইনের স্ত্রী মমতা গাইন, টিকেন্দ্র মন্ডলের স্ত্রী লতিকা মন্ডল ও বিমল গাইনের স্ত্রী উর্মিলা গাইন। কিন্তু কারাগারে যেয়ে সাজাভোগ না করে শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশনে বাড়িতে থেকে নিজেদের সংশোধনের সুযোগ করে দিয়েছেন আদালত।
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজেদের সংশোধনে ব্যস্ত সময় পার করছেন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আশাশুনি উপজেলার মহিষাডাঙ্গার উল্লেখিত ৪ আসামী। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মাদক বিরোধী প্রচার, গাছ লাগানো, ভালো কাজ করা এবং নিজেরা মাদক সেবন বা ক্রয় বিক্রয়ের সাথে যুক্ত না হয়ে উল্টো তার ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে প্রচার করে যাচ্ছেন তারা।
জানা যায়, একটি মারমারি মামলায় আশাশুনি উপজেলার মহিষাডাঙ্গা গ্রামের লহ্মীকান্ত গাইনের ছেলে গৌতম গাইনকে প্যানেল কোড ১৮৬০ এর ৩২৩ ও ৩৫৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে দুটি পৃথক ধারায় ৬ মাস কারাদন্ড প্রদান করা হয়। একই সাথে মামলার অপর আসামী একই গ্রামের লহ্মীকান্ত গাইনের স্ত্রী মমতা গাইন, টিকেন্দ্র মন্ডলের স্ত্রী লতিকা মন্ডল ও বিমল গাইনের স্ত্রী উর্মিলা গাইনকে ১৮৬০ এর ৩২৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে ১ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন আদালত। তবে উক্ত আসামীদের দন্ডিত শাস্তির পরিবর্তে এক বছরের জন্য কিছু শর্ত সাপেক্ষে আদালত তাদের প্রবেশন মঞ্জুর করেন।
শর্তগুলো হচ্ছে, প্রবেশন কালীন আসামীরা কোন অপরাধের সাথে জড়িত হবে না। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন। কোর্ট এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা তলব করলে যথা সময়ে উপস্থিত হবেন। কোন নেশাজাতীয় দ্রব সেবন করবেন না। খারাপ সঙ্গীর সাথে মিশবেন না। অভিযোগকারীর বাড়িতে ১০টি ফলজ ও ১০টি বনজ গাছ রোপণ করতে হবে।
আসামী গৌতম নিজ এলাকায় মাদক বিরোধী প্রচারণা চালাবেন। এছাড়া মমতা ও লতিকা বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে ১৫ দিন পর পর বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে প্রচারণা চালাবেন। এসব শর্ত দেখভালের জন্য সাতক্ষীরা প্রবেশন কর্মকর্তার উপর দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিন মাস পর পর আসামীদের শর্ত পালন বিষয়ে অগ্রগতির প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবেন প্রবেশন কর্মকর্তা।
সাতক্ষীরা সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন অফিসার সুমনা শারমীন জানান, দন্ডিত আসামীরা বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা মেনে বিভিন্ন সেবামূলক কাজের পাশাপাশি মাদকবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে তাদের প্রতিবেশীরাও এসব কাজে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এবং আদালতের এ ধরনের আদেশের প্রশংসা করছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা নিয়মিত তাদের কার্যক্রম মনিটরিং করছি এবং আদালতের দেওয়া আদেশ পালনে তাদেরকে সবরকম সহযোগিতা প্রদান করছি যাতে করে তারা সংশোধন হতে পারেন।
খুলনা গেজেট/এনএম