সাতক্ষীরায় স্বামীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন স্ত্রী। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে গ্রামের বাড়ি প্রতাপনগর যাওয়ার পথে অশাশুনি উপজেলাধীন সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের বুধহাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হওয়া ভাটা শ্রমিক আলতাফ হোসেনের (৩৪) মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফেরার পথে বুধহাটা বাজার এলাকায় পৌঁছালে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে থাকা গর্ভবতী স্ত্রী রহিমা খাতুনের প্রসব বেদনা শুরু হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন তিনি।
আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের মাসুম হোসেন জানান, প্রতাপনগর গ্রামের শামসুর রহমান সরদারের ছোট ছেলে ইটভাটা শ্রমিক আলতাফ হোসেন প্রতি বছরের মতো এবারও ঢাকায় একটি ইটের ভাটায় শ্রমিকের কাজে যান। গত দুই সপ্তাহ আগে আলতাফ হোসেন ইটভাটায় শ্রমিকের কাজে থাকা অবস্থায় শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করে প্রথমে বাড়িতে চলে আসেন। পরে চিকিৎসার জন্য তিনি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু আলতাফ হোসেনের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয় না। তার শরীরে ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে এবং ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বুধবার সকালে তার মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন পরিবারের সদস্যরা। পথেই অ্যাম্বুলেন্সে থাকা আলতাফের গর্ভবতী স্ত্রী রহিমা খাতুনের প্রসব বেদনা শুরু হয়। এরপর তিনি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।
প্রতাপনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালী জানান, বুধবার দুপুরে পারিবারিক কবরস্থানে আলতাফের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সদ্যভূমিষ্ঠ শিশু ও তার মা সুস্থ আছে। একদিকে স্বামীর মৃত্যুর বুকফাটা কান্না অন্যদিকে সন্তান ভূমিষ্ঠের যন্ত্রণা। তার স্ত্রী ও পুরো পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। আল্লাহ সবকিছুর উত্তম ফয়সালাকারী। আমরা পরিষদের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে আর্থিক ও সার্বিক সহযোগিতা করবো।
খুলনা গেজেট/এনএম