খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, রাজি পাকিস্তান; ভারতের ম্যাচ দুবাইয়ে : বিসিবিআই সূত্র
  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

সাতক্ষীরায় ফের বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় ফের বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। আমদানি অব্যহত থাকা সত্ত্বেও গত ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে সাতক্ষীরার বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতে কাঁচা মরিচের দাম দাম হঠাৎ বৃদ্ধিতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমাদের এখানেও মরিচের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা। এদিকে গত চার দিনে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ২৪০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি করা হয়েছে।
বুধবার (৫ জুলাই) সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারে গিয়ে দেখা গেছে পাইকারি বাজারে ভারতীয় আমদানিকৃত কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকবা কেজি। খুচরা বাজারে এই  মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা শ’ বা ৪০০ টাকা কেজি দরে। অথচ মঙ্গলবার (৪ জুলাই) পাইকারি বাজারে ভারতীয় আমদানিকৃত কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল মাত্র ২৬০ টাকা কেজি। যা খুচরা বাজারে ছিল ৩০০ টাকা কেজি। ভারত থেকে আমদানি অব্যহত থাকা সত্ত্বেও গত ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে সাতক্ষীরার বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা সাধারণ ক্রেতাদরে জন্য ছিল রীতিমত অস্বস্তিকর। বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিয়মিত নজদারি না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাজারে আসা অনেক ক্রেতা।
শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার শওকত হোসেন জানান, বাজারে কোন জিনিসের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোন তদরিকি নেই। বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছামত দাম হাকিয়ে জিনিস বিক্রি করছেন। ফলে প্রতিদিনই বাজারে দ্রব্য মূল্যের তারতম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গতকাল বাজারে যে কাঁচা মরিচ খুচরা ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি দরে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০০ টাকা বেশি। অথচ শুনেছি প্রতিদিন ভোমরা বন্দর দিয়ে ভারতীয় কাঁচা মরিচ দেশে আসছে। তিনি বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিয়মিত মনিটরিংয়ের দাবি জানান।
অপর এক ক্রেতা শহরের পলাশপোল এলাকার সিরাজুল ইসলাম জানান, কাঁচা মরিচ নিয়ে বাজারে রীতিমত তুঘলকিকান্ড চলছে। সুযোগ বুঝে পাইকাররা ইচ্ছামত দাম হাকিয়ে ক্রেতাদের প্রতারিত করছেন। যথেষ্ট সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কাঁচা মরিচের দাম বেশি নিচ্ছেন পাইকাররা। আর এর ফল ভোগ করছেন সাধারণ ক্রেতারা ।
তবে শহরের সুলতানপুর বড়বাজারের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ি লিয়াকত হোসেন ক্রেতাদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা কেনার উপর সামান্য লাভে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে থাকি। বাজারে কোন জিনিসের সরবরাহ বেশি থাকলে তার দাম কমে যায়। আবার সরবরাহ কমে গেলে দামও বেড়ে যায়। আমদানির শুরুতেই সরবরাহ বেশি থাকায় ভারতীয় কাঁচা মরিচের দাম কম ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমে গেছে। যে কারণে দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আমদানিকারকদের কাছে শুনেছি ভারতেও নাকি কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে গেছে। যে কারণে আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
বাজারের খুচরা সবজি ব্যবসায়ি ইসমাইল হোসেন জানান, মঙ্গলবার ভারতীয় আমদানিকৃত কাঁচা মরিচ ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে কিনেছিলা। কিন্তু বুধবার সেই মরিচ কিনলাম ৩৬০ টাকা কেজি। এরপর আড়তদারিসহ অন্যান্য খরচ আছে। বাধ্য হয়ে আমরাও ৪০০ টাকায় কেজি বিক্রি করছি। আমরা কেনার উপর সামান্য লাভে মাল বিক্রি করে থাকি। ফলে কোন জিনিসের দাম কম বেশিতে আমাদের খুচরা বিক্রেতাদের কোন হাত থাকে না।
ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম খান জানান, রোববার থেকে বুধবার পর্যন্ত চার দিনে ভারত থেকে ২৪ ট্রাকে প্রায় ২৪০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে। আমাদের যথেষ্ট এলসি ও আইপি পারমিশন আছে। কিন্তু হঠাৎ করে ভারতে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যে কারণে স্থানীয় বাজারে হঠাৎ করে মরিচের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে আমদানি অব্যহত থাকলে অল্প কিছুদিনের মধ্যে দাম আরো কমে যাবে বলে জানান এই ব্যবসায়ি নেতা।
ভোমরা স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির শুরু থেকে প্রতিদিন ৭ ট্রাক করে কাঁচা মরিচ এই বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। কিন্তু বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৩ ট্রাক মরিচ ঢুকেছে। এনিয়ে গত চার দিনে ২৪ ট্রাকে প্রায় ২৪০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ ভোমরা বন্দরে ঢুকেছে। কাঁচা মরিচের আরো ট্রাক ভারতের ওপারে ঘোজাডাঙ্গা এলাকায় আছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
খুলনা গেজেট/এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!