সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহরে ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজান চৌধুরীর সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক নৌকার কর্মী সমর্থকদের মারপিট, অফিস ও দোকানঘর ভাংচুর এবং হুমকি ধামকিসহ এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৪ নভেম্বর) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ধুলিহর গ্রামের মৃত আনার মাস্টারের ছেলে ও ইউনিয়ন আ’লীগের ভারপ্রারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ বোরহান উদ্দীন এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে ৮নং ধুলিহর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজান চৌধুরী জয়লাভ করার পরই তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় নৌকার কর্মী সমর্থকদের বাড়ি ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর এবং লুটপাট শুরু করে। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা প্রকাশ্যে অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দিচ্ছেন। যারা নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন তাদেরকে খুঁজে বের করে এলাকা ছাড়তে হুমকি দিচ্ছে। অনেকের বাড়ির সামনে গিয়ে লাঠি সোটা নিয়ে তাদেরকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। মিজান চৌধুরীর বাহিনীর সদস্যরা ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ আ’লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রকাশ্যে খুন জখমের হুমকি দিয়ে গৃহবন্দি করে রেখেছে। তার বাহিনীর দাপটে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আজহারুল বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। তাদের তান্ডবে এলাকার আ’লীগের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ এক রকম জিম্মি হয়ে পড়েছেন। ইতিমধ্যে বাড়ি ছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সেক্রেটারী বাবলুর রহমান। এছাড়া আওয়ামী লীগের আরো অনেক নেতাকর্মী তাদের ভয়ে বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন।
শেখ বোরহান উদ্দীন আরো বলেন, মিজান চৌধুরীর বাহিনীর নেতা মাহমুদ হাসান বাবলু, বিপ্লব, সাদ্দাম হোসেন, আবুল কাশেম, ইদ্রিস আলী, রাজ্জাক, ফজলু, জাহিদ, আজমল, আনারুলসহ ৪০/৫০ জনের একটি বাহিনী গত ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় বড়দল গ্রামের ভাগ্যের বাড়ির মোড়ে অবস্থিত ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কার্যালয় এবং যুবলীগ সেক্রেটারির বাবলুর রহমানের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেন।
খবর পেয়ে স্থানীয় ব্রহ্মরাজপুর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এছাড়া নির্বাচনের পরদিন মাটিয়াডাঙ্গা, যুগিপোতা, সুপারিঘাটা,বালুইগাছা, খড়িয়াডাঙ্গা, সানাপাড়া ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের খুন জখমসহ বিভিন্ন হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। মিজান চৌধরীর বাহিনীতে যোগ দিয়েছে ইউনিয়নের জায়ামাত-বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চান মিজান চৌধুরি। ফলে তার বাহিনীর সন্ত্রাসী কার্যকলাপে নির্বাচন পরবর্তীতে ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
তিনি এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অবিলম্বে মিজান চৌধুরী ও তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং এলাকায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এবিষয়ে জানার জন্য নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মিজান চৌধুরীর কাছে তার ব্যবহৃত ০১৭১৯-৪৮১৩৭৩ নাম্বারের মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
খুলনা গেজেট/ টি আই