সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র পোল্ডার নং ১-৬৮ এবং ৬৮ এক্সটেনশন এর নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নে নদী খননে মাথা গোজার ঠাঁই হারানোর শংকায় সদর উপজেলার ব্যাংদহা আবাসন প্রকল্পের ১শ’ ভূমিহীন পরিবার। জোড়দিয়া-মরিচ্চাপ নদীর চর ভরাটি জমিতে ২০১৪ সালে নির্মিত ভূমিহীন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের ভবন বাঁচিয়ে নদী খননের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ভূমিহীন পরিবার গুলো। ইতিমধ্যে অসহায় পরিবারগুলো সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সে অনুযায়ী ২০১৪ সালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের জোড়দিয়া/মরিচ্চাপ নদীর চর ভরাটি জমিতে ব্যাংদহা আবাসন আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করা হয়। সেখানে ২০টি ভবনে ৫টি করে মোট ১শ’ টি ভূমিহীন পরিবার বসবাস করে আসছেন। সে সময় ভূমি অফিস কর্তৃক যাচাই বাছাই পূর্বক প্রকৃত ভূমিহীনদেরকেই উক্ত প্রকল্পের ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু চলতি অর্থ বছরে সাতক্ষীরায় পাউবো বিভাগ-১ ও বিভাগ-২ এর আওতাধীন পাল্ডার নং ১-৬৮ এবং ৬৮ এক্সটেনশন এর নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষে মরিচ্চাপ নদী খননের কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে খননের পূর্বে মাটি ফেলার জন্য সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাতে করে উক্ত ২০টি ভবনের ১২টিই কম বেশি ভাঙ্গা পড়বে। এতে করে ওই ভূমিহীন পরিবারগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এই তীব্র শীতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোথায় আশ্রয় এ নিয়ে তাদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
আবাসন প্রকল্পের ভুক্তভোগী নুরুল সরদার বলেন, আমি ভূমিহীন অসহায় মানুষ। থাকার মত ঘর ছিলো না। জমিও নেই। ফলে ছিন্নমুলের মত মানবেতর জীবন যাপন করতাম। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে আশ্রয় পেয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শান্তিতে বসবাস করছিলাম। কিন্তু এখন যদি ওই ভবন ভেঙ্গে দেওয়া হয় তাহলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে থাকা ছাড়া কোন উপায় নেই। তিনি ভূমিহীনদের মাথা গোজার ঠাই ভবন বাঁচিয়ে নদী খননের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
সেখানে বসবাসকারী মুকুল হোসেন অহিদুর রহমানসহ সকল বাসিন্দারাই একইভাবে তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্প বাঁচিয়ে নদী খননের দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে তারা সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডেও উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদেও জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডেও ২টি বিভাগের অধীনে পাল্ডার নং ১-৬৮ এবং ৬৮ এক্সটেনশন এর নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী খনন ও বেড়িবাঁধ সংষ্কারের কাজ করা হবে। এজন্য প্রায় ৪৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রথমে মরিচ্চাপ নদী খননের কাজ শুরু হবে খুব তাড়াতাড়ি। ইতিমধ্যে খাল খননের পর খালের মাটি ফেলার জায়গা নির্ধারণের কাজও চলছে।
খুলনা গেজেট/এনএম